‘স্মার্ট ফায়ার আর্মস লাইসেন্স কার্ড’ ইস্যুর রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম শুরু করেছে ঢাকা জেলা প্রশাসন।
মঙ্গলবার ঢাকা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ কার্যক্রম নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
‘স্মার্ট ফায়ার আর্মস লাইসেন্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ইনাগুরেশন’ বিষয়ক এই সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মমিনুর রহমান।
মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, ‘দক্ষ, সেবামুখী ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসন গড়ে তোলার লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের ধারাবাহিক কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে সকল সেবার ক্ষেত্রে ডিজিটাল সেবা প্রদান নিশ্চিত করা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি। এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন এবং ডিজিটাল তথা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে নানা পর্যায়ের পরিকল্পনার ধারাবাহিকতায় ঢাকা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যালয় কর্তৃক ইস্যুকৃত সকল প্রকার আগ্নেয়াস্ত্র এবং ডিলার লাইসেন্সধারীগণকে অনলাইন পোর্টালভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘জেলা প্রশাসন ঢাকার উদ্যোগে এবং স্পেক্ট্রাম আইটি সলিউশন লিমিটেডের কারিগরি সহায়তায় ঢাকা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে বুথ স্থাপনের মাধ্যমে গত ১৯ ডিসেম্বর 'স্মার্ট ফায়ার আর্মস লাইসেন্স কার্ড' ইস্যুর কার্যক্রম শুরু হয়েছে।’
মার্চ মাস পর্যন্ত এই কার্যক্রম চলবে জানিয়ে তিনি প্রক্রিয়াটির সফল বাস্তবায়নের নিমিত্ত আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্সধারীগণকে অফিস চলাকালীন সময়ে আগ্নেয়াস্ত্র শাখায় বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন বুথে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস ও ফি জমাদানপূর্বক নিজ নিজ লাইসেন্সের রেজিস্ট্রেশন নিশ্চিত করার জন্য অনুরোধ জানান।
মমিনুর রহমান বলেন, ‘১৮ ধরনের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সম্বলিত অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ডুয়েল ইন্টারফেস কন্টাক্টলেস স্মার্ট কার্ডটি বৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার বন্ধের পাশাপাশি কাগুজে লাইসেন্স ব্যবহারের জটিলতা নিরসনে ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখবে।’
ঢাকা জেলা প্রশাসন জনগণের দ্বারে দ্রুততম সময়ে সেবা পৌঁছে দেওয়ার যে ব্রত নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে তারই অংশ হিসেবে সেবা গ্রহীতাদের সাথে ঢাকা জেলা প্রশাসনের কানেক্টিভিটি নিশ্চিত করা, সেবা প্রদানের স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিতকরণে ‘স্মার্ট ফায়ার আর্মস লাইসেন্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলেও প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
স্মার্ট কার্ডের সব তথ্য ঢাকা জেলা প্রশাসনের নিজস্ব পোর্টালে সংরক্ষিত থাকবে। অনুমোদিত নির্দিষ্ট মেয়াদের পর লাইসেন্স নবায়ন না করলে কার্ডটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্লক হয়ে যাবে। এ ছাড়া শর্ত ভঙ্গ করে অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার করলেও লাইসেন্স বাতিল হবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে এ কার্যক্রম দেশের ২৭টি জেলায় বাস্তবায়িত হয়েছে। ঢাকা জেলা প্রশাসক ও ক্যান্টনমেন্টে দুটি বুথ স্থাপন করে কার্যক্রম চলছে। পর্যায়ক্রমে জেলার ৫টি উপজেলায় কার্যক্রম শুরু করা হবে।’
বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন করার পর নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করে মো. আমান উল্লাহ জানান, তার আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সটি আঠারো বছরের পুরনো। লাইসেন্সটি সময়ের সাথে মলিন ও জীর্ণ হয়ে যাওয়ায় ডুপ্লিকেট লাইসেন্স ইস্যুর পরিবর্তে স্মার্ট লাইসেন্স কার্ডের ইস্যু হলে কার্ডটি সংরক্ষণ সহজ হবে।
তিনি আরও জানান, তার বাসস্থান উত্তরা থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, ঢাকায় আসতে ট্রাফিক জ্যামে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করে আসতে হয়। ব্যাংকের লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে নবায়নের ফি জমা দিয়ে অস্ত্র নবায়নের জন্য সর্ম্পূণ একটি কর্মদিবস হাতে নিয়ে আসতে হয়। অস্ত্র নবায়ন পদ্ধতি ডিজিটালাইজড হয়ে গেলে এসব ভোগান্তির হাত থেকে মুক্তি মিলবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
উল্লেখ্য, ব্রিটিশ আমল থেকেই শতাব্দীপ্রাচীন ঢাকা জেলা প্রশাসন ঢাকা মহানগরীসহ জেলার পাঁচটি উপজেলার সব আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়নসহ এসংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত