কয়েকটি ব্র্যান্ড আউটলেটে অপ্রত্যাশিত হামলা ও ভাঙচুরের নিন্দা জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
গতকাল বুধবার তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে তিনি এই নিন্দা জানান। তিনি বলেন, সহিংসতা কখনো প্রতিবাদের ভাষা হতে পারে না।
ফেসবুকে তিনি লেখেন, ‘গাজায় নিরীহ মানুষের ওপর চলমান বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে দেশজুড়ে সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে যেসব শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ ও সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে, তা নিঃসন্দেহে মানবিকতা ও নৈতিক মূল্যবোধের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।সরকারের পক্ষ থেকেও এই ন্যায্য ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতি যে ইতিবাচক ও স্পষ্ট সমর্থন প্রকাশ পেয়েছে, তা অবশ্যই প্রশংসনীয়। তবে গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করা যাচ্ছে যে এই শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে দেশের কিছু স্থানে কয়েকটি ব্র্যান্ড আউটলেটে অপ্রত্যাশিত হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। ব্যক্তি হিসেবে এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে আমরা এসব সহিংস ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের জোরালো নিন্দা ও স্পষ্টভাবে বিরোধিতা জানাই।’
জামায়াতের আমির আরো বলেন, ‘সহিংসতা কখনোই কোনো গ্রহণযোগ্য প্রতিবাদের ভাষা হতে পারে না। বরং তা প্রতিবাদের ন্যায্যতাকেই কলুষিত করে তোলে। সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে যে উদ্যোগ নিয়েছে, তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞতা ও সাধুবাদ জানাই।’
মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের অবদান স্মরণ
জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাপ্তাহিক সোনার বাংলা পত্রিকার সাবেক সম্পাদক শহীদ মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের অবদান ও ত্যাগ স্মরণ করে বিবৃতি দিয়েছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান।
গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, কামারুজ্জামান সাংগঠনিক কার্যক্রমের পাশাপাশি দৈনিক সংগ্রাম ও সাপ্তাহিক সোনার বাংলায় লেখার মাধ্যমে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে কথা বলতেন এবং লেখক, গবেষক ও সাংবাদিক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তার রচিত গ্রন্থ ও প্রবন্ধ ইসলামী আন্দোলনের কর্মী ও দেশবাসীকে অনুপ্রাণিত করবে।
তিনি আরো বলেন, জেনারেল এরশাদ ও শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনবিরোধী আন্দোলনে তিনি (কামারুজ্জামান) জামায়াতের রাজনৈতিক লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য হিসেবে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। গণতন্ত্র, আইনের শাসন, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তার অবদান স্মরণীয়। তৎকালীন সরকার মিথ্যা ও সাজানো মামলায় মিথ্যা সাক্ষ্যে তাকে ফাঁসির দণ্ড দেয়। ২০১৫ সালের ১১ এপ্রিল রাত ১০টা ৩০ মিনিটে তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
বিনিয়োগকারীদের সহায়তার আশ্বাস
বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আসা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের প্রতি জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন দলের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২৫-এ অংশ নেওয়া বিদেশি ও দেশি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে গতকাল জামায়াতে ইসলামীর একটি প্রতিনিধিদল বৈঠক করে। অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এই দলের নেতৃত্ব দেন।
জামায়াতের প্রতিনিধিদলে আরো ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ইন্ডাস্ট্রিজ ও বিজনেস বিভাগের সহসভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম রাজু, সেক্রেটারি ড. আনোয়ারুল আজিম এবং সদস্য মাসুদ কবির।
বৈঠকে তাঁরা বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের পরিবেশ এবং এর বিভিন্ন সমস্যা ও সমাধান নিয়ে আলোচনা করেন। চীন, ব্রিটেন, কানাডা ও নেদারল্যান্ডসের বিনিয়োগকারীরা জামায়াতের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাঁদের উদ্বেগের কথা জানান।
অধ্যাপক গোলাম পরওয়ার বলেন, বাংলাদেশের নতুন পথচলায় বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জন করতে পারলে এবং বিনিয়োগের জন্য ভালো পরিবেশ তৈরি করতে পারলে সবার ত্যাগ ও স্বপ্ন সফল হবে। জামায়াতে ইসলামী সুশাসন, সততা, নিষ্ঠা এবং তরুণ উদ্যোক্তাদের স্বপ্ন পূরণে অর্থনীতি ও ব্যবসাবান্ধব নীতি তৈরি করে সব ধরনের সহযোগিতা করবে।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম