শুরু হয়ে গিয়েছে ভারতের ষোড়শতম লোকসভার নির্বাচন। স্বভাবতই দেশ-বিদেশের খ্যাতনামা গণমাধ্যমের নজর এখন বিশ্বের গণতন্ত্রের পীঠস্থান এই দেশটির দিকে। নির্বাচনে ঘুরে-ফিরে আলোচনায় আসছে সোনিয়া-রাহুল-মোদির মতো শীর্ষ নেতাদের পাশাপাশি মমতা-জয়ললিতা-মায়াবতীর নাম। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, এবারের নির্বাচনে ভারতের নতুন সরকার গঠনের চাবিকাঠি এই তিন নারীর মুঠোয়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূল কংগ্রেসের মমতা বন্দোপাধ্যায়, এআইএডিএমকে নেত্রী জয়ললিতা এবং বহুজন সমাজ পার্টি প্রধান মায়াবতী এই ত্রয়ীর সাক্ষাৎকার পেতে মরিয়া আন্তর্জাতিক গণমাধ্যাম। দেশজুড়ে মোদি ঝড় উঠলেও আন্তার্জাতিক মহল মনে করছে ভারতের আগামী লোকসভায় এই নিয়ন্ত্রক শক্তিদের মধ্যে অন্যতম হবেন মমতা বন্দোপাধ্যায়।
সেই লক্ষ্যেই তৃণমূল প্রধানের একান্ত সাক্ষাৎকার পেতে কলকাতায় ছুটে এসেছে বিবিসি, আল জাজিরা, গাল্ফ নিউজ, নিউইয়র্ক টাইমসের মতো সাংবদামাধ্যমের কর্মীরা। ভারতের সরকার গঠনের চাবিকাঠি সম্পর্কে তৃণমূল প্রধানের বক্তব্য জানতে চায় বিদেশি সংবাদ মাধ্যমগুলি। তবে মমতা রাজি না থাকায় এখনই কোনও বিদেশি গণমাধ্যমকে সেই সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না বলে তৃণমূল সূত্রে খবর।
নেত্রীর সাক্ষাৎকার পেতে প্রতিদিন বহু গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে দল ও সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। যদিও নেত্রীর সঙ্গে আলোচনা না করে কোনও সিদ্ধান্তই নেওয়া হবে না। এর আগেও বিভিন্ন সময় মমতার সাক্ষাৎকার পেয়েছে আন্তর্জাতিক মিডিয়া। তবে নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত থাকার কারণে আন্তর্জাতিক কোনও গণমাধ্যমকে পৃথকভাবে সময় দিতে পারছেন না মমতা। তবে তাদের নিরাশও করেননি তিনি। নির্বাচনের আগে নেত্রীর প্রচার কর্মসূচির লিখিত বিবরণী বিদেশি সাংবাদিকদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই তালিকা হাতে নিয়েই মমতার সঙ্গে সঙ্গে উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গে কভারেজ করতে ছুটছে একঝাঁক বিদেশি সাংবাদিক।
এমনিতে তৃণমূল প্রধানকে ঘিরে আন্তর্জাতিক মিডিয়ার এই আগ্রহ কিন্তু নতুন নয়। ২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতা বদলের সময়ও বাংলায় ভিড় জমিয়েছিল বিশ্ব মিডিয়া। ৩৪ বছর ধরে একটা রাজ্যে শাসন ক্ষমতা ধরে রেখে কার্যত বিশ্ব রেকর্ড হাঁকিয়েছিল বামেরা। বামপন্থীদের সেই রেকর্ডকে ভেঙে এক নারী বাংলায় ডানপন্থী দলের শাসন প্রতিষ্ঠা করেন। সেই পরিস্থিতির দিকে নজর ছিল সারা বিশ্বের। সমগ্র বিশ্ববাসী সাক্ষী হয়েছিলেন পরিবর্তনের সরকারের। এবারও 'গুগুল হ্যাংআউট'-এর সঙ্গে জোট গড়ে দেশীয় চার থেকে পাঁচটি সংবাদমাধ্যম মমতার সাক্ষাৎকারের প্রস্তাব দিয়েছে। যদিও এখনও কিছু চূড়ান্ত হয়নি।