ম্যাচ নিয়ে কি বলব। আসলে দেশ যখন হারে কিছুই ভালো লাগে না। জাতীয় দলে দীর্ঘদিন ক্রিকেট খেলেছি এবং নেতৃত্বও দিয়েছি। এ জন্য বর্তমানে করুণ অবস্থার জন্য অনেকের তিরস্কার শুনতে হচ্ছে। সত্যি বলতে কি একটি দলের সময় খারাপ যেতেই পারে। অস্ট্রেলিয়ার কথা ভাবুন, এক সময় তারা অপ্রতিরোধ্য ছিল। এখন তাদেরই কিনা টি-২০ বিশ্বকাপ জেতাটা স্বপ্নে পরিণত হয়েছে। এই অবস্থা কি তাদের পরিবর্তন হবে না। নিশ্চয় হবে এ কথা জোর গলায় বলতে পারি। আর বাংলাদেশের ক্রিকেটে যে সংকটাপন্ন অবস্থা চলছে তা কেটে যেতে পারে টি-২০ বিশ্বকাপেই। অনেকেই হয়তো বিরক্ত প্রকাশ করে বলতে পারেন, যে দলের টপটেনের সব শেষ হয়ে গেছে। সেখানে আবার সংকট কাটবে কীভাবে? আসলে কে কি ভেবেছিলেন জানি না। আমি কিন্তু বরাবরই বলে আসছি বাংলাদেশ টি-২০ বিশ্বকাপে সেমি বা ফাইনাল খেলবে না। কেননা গ্রুপটা এতই শক্তিশালী যা সম্ভবই ছিল না। তবে আশা করেছিলাম হংকংয়ের কাছে হেরে মুশফিকদের ভেতর যে জেদ তৈরি হয়েছে তাতে টপটেনে শুধু নৈপুণ্যতার স্বাক্ষর রাখবে না একটা ম্যাচ জিতবে। সত্যি বলতে কি আমি প্রথম ম্যাচ নিয়ে দারুণ আশাবাদী ছিলাম। অথচ ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে দাঁড়াতে পারেনি। পরের ম্যাচেও একই অবস্থা।
আজ পাকিস্তান ও ১ এপ্রিল বাংলাদেশ গ্রুপের শেষ ম্যাচ খেলবে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে। টানা হারে মুশফিকদের সঙ্গে ১৬ কোটি মানুষও হতাশায় ভাসছে। যেখানে যাই সেখানেই শুধু বাংলাদেশের ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা শুনি। এই ব্যর্থতা সব নিঃশেষ হয়ে যাবে যদি বাকি দুই ম্যাচে বাংলাদেশ অন্তত একটিতে জিতে যায়। আর এক জয়ে নতুনভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন মুশফিকরা। প্রশ্ন হলো বাংলাদেশ পারবে কিনা? দেখেন বর্তমানে সময়টা খারাপ গেলেও ক্রিকেটে অসম্ভব বলে কিছু নেই তা বাংলাদেশ একাধিকবার প্রমাণ করেছে। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে প্রথমবারের খেলতে গিয়ে আমরা পাকিস্তানকে হারিয়েছি। অথচ সেই বিশ্বকাপে পাকিস্তান রানার্স আপ। তখন পারলে এখন কেন পারবে না। দুই এশিয়া কাপে জেতা ম্যাচতো সামান্য ভুলের জন্য আমরা পাকিস্তানের কাছে হেরে যাই। আসলে মাঠে ইদানীং ভুলটা বেশিই হচ্ছে। মুশফিকদের দেখে মনে হচ্ছে ওরা খুব ক্লান্ত। কেন এমন হচ্ছে বুঝতে পারছি না। ম্যাচ হারলেই পরিবর্তনের কথা উঠে। খারাপ খেললে অবশ্যই তাকে বদলানো দরকার। প্রসঙ্গক্রমে বার বার তামিমের নাম আসছে। অনেকে বলছেন, ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দি থাকার পরও তামিমকে বাদ দেওয়া হচ্ছে না কেন? ভালো কথা, কিন্তু তামিমের পরিবর্তে যিনি আসবেন তাকেতো যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হবে। গত দুই ম্যাচে দলে পরিবর্তনতো কম হয়নি। কই যারা নামছেন তারা কি যোগ্যতার প্রমাণ দিতে পারছেন। বোলিং কিছুটা ভালো করলেও ব্যাটিংয়ে চরম বিপর্যয়। ফিল্ডিংওতো চোখে পড়ার মতো হচ্ছে না। সুতরাং এই অবস্থায় ম্যাচ কী জেতা যায়। তারপরও বলব বুঝে-শুনে খেলতে পারলে পাকিস্তান কেন অস্ট্রেলিয়াকেও হারানো সম্ভব। মুশফিক-সাকিবদের মনে রাখতে হবে ধারাবাহিক ব্যর্থতায় দেশবাসী তাদের ওপর আস্থা হারাতে শুরু করেছেন। এটা ভুল প্রমাণিত করতে হলে অন্তত একটি ম্যাচ জেতা জরুরি হয়ে পড়েছে। আমি বিশ্বাস করি সেই সামর্থ্য তাদের রয়েছে।