৬০ দিনের জন্য ব্রাজিলে বেড়াতে গেলে বিমানভাড়া ছাড়াই খরচ হবে দুই লাখ পঁচিশ হাজার মার্কিন ডলার (প্রায় এক কোটি চুয়াত্তর লাখ টাকা)! ২০০২ সালের বিশ্বকাপজয়ী ব্রাজিল দলের সদস্য মারকো আন্দ্রে বাতিস্তা এমনটাই দাবি করেছেন। প্রাত্যহিক ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ব্রাজিলে এখন জীবন ধারণই মুশকিল হয়ে পড়েছে। এই নিয়ে রোমারিওরা গত বছরের ফিফা কনফেডারেশনস কাপের আগে থেকেই লড়াই শুরু করেছেন। সেই লড়াইয়ে একাত্দতা ঘোষণা করেছেন ব্রাজিল বিশ্বকাপের স্থানীয় আয়োজক কমিটির পরিচালক ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি রোনাল্ডোও।
ব্রাজিলিয়ানদের এই জীবন সংগ্রামের শেষ কোথায়! বিশ্বকাপ শেষ হলে কি সহসা এর সমাধান হবে! নাকি দীর্ঘদিন এর বোঝা বইতে হবে তাদের! এসব প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। বিশেষ করে পেশাদার ফুটবলারদের ক্ষেত্রে। ব্রাজিলে ২০ হাজার পেশাদার ফুটবলার রয়েছেন। এর মধ্যে ১৬ হাজারেরই মাসিক আয় ৪০০ ডলারেরও অনেক কম। তা ছাড়া বছরের অর্ধেক সময় তাদেরকে বেকারই থাকতে হয়। স্টেট চ্যাম্পিয়নশিপ শেষ হয়ে গেলে ছোট ক্লাবগুলো নিজেদের মধ্যে অগোছাল কিছু ম্যাচের আয়োজন করে বটে। তবে এতে ফুটবলারদের আয়ে তেমন পার্থক্য আনতে পারে না। আয় বৃদ্ধির দাবিতে ব্রাজিলের প্লেয়ার ইউনিয়নও সোচ্চার হয়েছে। খেলোয়াড়দের প্রেসার গ্রুপ 'বম সেনসো' এ ব্যাপারে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে ব্রাজিল বিশ্বকাপ আয়োজন করতে গিয়ে বড় ধরনের ঝামেলাতেই জড়িয়েছে।
এদিকে ফুটবলে সংস্কার আনার লক্ষ্যে ব্রাজিলিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ) পুরনো প্রেসিডেন্ট বদলে নতুন প্রেসিডেন্টের নাম ঘোষণা করেছে। ৭৩ বছর বয়সী মারকো পোলো ডেল নিরো হতে চলেছেন সিবিএফের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট। নতুন প্রেসিডেন্ট কি ব্রাজিলিয়ান ফুটবলে সংস্কার আনতে সক্ষম হবেন! এই প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে। ব্রাজিলিয়ান ফুটবলাররা ব্রাজিল ছেড়ে ইউরোপ কিংবা এশিয়ার দিকে যাত্রা করছে। এ সমস্যাগুলো ব্রাজিলের নিত্যনৈমিত্তিক। ব্রাজিলকে একটা চূড়ান্ত সমাধানের দিকে যেতে হলে বিশ্বকাপের পরই এসব নিয়ে ভাবতে হবে। আগামী ১২ জুন থেকে শুরু হচ্ছে ২০তম বিশ্বকাপ। পৃথিবীর বৃহৎ এই ক্রীড়াযজ্ঞ সামনে নিয়ে বিতর্ক বাড়ালে ব্রাজিলিয়ানরা বিপদেই পড়বে। রোনাল্ডোরা বাস্তবতাটা স্বীকার করলেও বিশ্বকাপ আয়োজনটা সফলভাবেই শেষ করতে চান। দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত সব বাধা অতিক্রম করে ফিফা সভাপতির চাওয়া অনুযায়ী ব্রাজিল সর্বকালের সেরা বিশ্বকাপ আয়োজন করতে সক্ষম হয় কিনা!