টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় সাংবাদিক কিছুটা আক্ষেপের সুরেই মহেন্দ্র সিং ধোনিকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, 'এর পরেও কি জাতীয় দলে যুবরাজকে দেখা যাবে? কিংবা ২০১৫ বিশ্বকাপে?' ভারতীয় অধিনায়ক অনেকটা নির্বিকারভাবেই উত্তর দিয়েছিলেন, 'যুবরাজকে নিয়ে মন্তব্য করার সময় এখনো আসেনি। ভবিষ্যতই বলে দেবে!' 'কাপ্টেন কুল' কি সত্যিই কিছু একটা আন্দাজ করতে পেরেছিলেন!
যে ছেলেটা মৃত্যুকে (ক্যান্সার) পরাজিত করে করতে পারে সে যে ২২ গজে এত সহজে হাল ছেড়ে দেবে তা তো হতে পারে না! বিশ্বকাপের ফাইনালে হতাশাজনক ব্যাটিংয়ের পর আইপিএলের প্রথম ম্যাচেই স্বরূপে ফিরেছেন যুবরাজ সিং। মাত্র ২৯ বলে অপরাজিত ৫২ রানের ইনিংস খেলে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুকে দারুণ এক জয় এনে দিয়েছেন। ইনিংসে পাঁচ পাঁচটি বিশাল ছক্কা। সারজায় মাঠে নেমে যুবরাজ যেন মনে করে দিচ্ছিলেন ২০০৭ সালের বিশ্বকাপকে। দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত টি-২০ বিশ্বকাপের ওই আসরে ভারত শিরোপা জিতেছিল যুবরাজের ব্যাটিং দাপটেই। ২০১১ সালে ঘরের মাঠে ভারত দীর্ঘ ২৮ বছর পর ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছেন যুবির জাদুকরী পারফরম্যান্সে ভর করেই। ব্যাটে-বলে কি দাপট! শুধু তাই নয়, এর আগে যুবরাজ ভারতকে অনূধর্্ব-১৯, অনূধর্্ব-১৫ বিশ্বকাপের শিরোপা এনে দেন। ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসে দ্বিতীয় কোনো ক্রিকেটার খুঁজে যাওয়া যাবে না, যে কিনা একাই চার চারটি বিশ্বকাপের শিরোপা জিতিয়ে দিয়েছে। কিন্তু টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে ২১ বলে ১১ রানের ইনিংসটাই যেন আগের সব কীর্তি মুছে দেয়! মাত্র আধা ঘণ্টার এক ইনিংসই কী ১৪ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের সব অর্জন ধূলিস্মাৎ করে দিল! এবার টি-২০ বিশ্বকাপে ভারত হারার পর সমর্থকরা যুবরাজের বাড়িতে পাথর নিক্ষেপ করে। সমালোচনা করতে ছাড়েননি কেউ-ই। যুবির ক্রিকেট ক্যারিয়ারের শেষে দেখে ফেলেছিলেন অনেকেই। সমালোচকরা বলেছিলেন, অযথাই ব্যাঙ্গালুরু বিশাল অঙ্কের অর্থ ব্যয় করে তাকে দলে ভিড়িয়েছে। এতো কিছু মুখ বুঝে সহ্য করে যুবরাজ যেন সমালোচনার জবাব দিলেন ব্যাট দিয়েই।