ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রায় অর্ধেক ম্যাচেই কিপিং করেছেন লোকেশ রাহুল। সম্প্রতি কিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবেই পুনরুজ্জীবিত করেছেন নিজের ওয়ানডে ক্যারিয়ার। ভারতের হয়ে টি-টোয়েন্টিতেও টুকটাক কিপিং করেছেন তিনি। তবে টেস্ট ক্রিকেটে কখনও করেননি। এখনও সেই চ্যালেঞ্জও নিতে প্রস্তুত তিনি। টেস্ট একাদশে জায়গা ফিরে প্রয়োজনে কিপিং করতে হলেও সানন্দেই তা করবেন বলে জানালেন ৩১ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার।
ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৭২ ম্যাচের ৩৩টিতেই কিপিং গ্লাভস হাতে নিয়েছেন রাহুল। এর মধ্যে এই বছরই এই ভূমিকা পালন করেছেন ২১ ম্যাচে। এই সংস্করণে তার ক্যারিয়ার ব্যাটিং গড় ৫০.৭৯ হলেও কিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলে ব্যাটিং গড় ৬০.৬৩। দেশের হয়ে টি-টোয়েন্টিতেও কিপিং করেছেন তিনি ৮ ম্যাচে। কিন্তু টেস্টে কখনও কিপিং গ্লাভস হাতে নেননি। অভিষেক ইনিংসটি ছাড়া ৪৭ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারের বাকি পুরোটাই টপ অর্ডারে ব্যাট করেছেন রাহুল। কিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবে এই সংস্করণে তাকে আগে বিবেচনা করেনি দল।
বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলে টেস্টে তার সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স ভালো নয়। সবশেষ ১০ ইনিংসে তার নেই ফিফটি। গত ফেব্রুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচের মাঝপথে ছিটকে পড়েন দল থেকে। এবার দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের দল দিয়ে আবার তাকে ফেরানো হয়েছে টেস্টে। তবে এই মুহূর্তে ভারতের টপ অর্ডারে জায়গা ফাঁকা নেই। অধিনায়ক রোহিত শার্মার সঙ্গে এখন ওপেন করছেন ইয়াসাসবি জয়সওয়াল। তিনে খেলছেন শুবমান গিল। একাদশে জায়গা পেতে হলে তাক চোখ রাখতে হবে কিপার-ব্যাটসম্যানের ভূমিকাতেই।
দক্ষিণ আফ্রিকায় টেস্টের আগে অবশ্য ওয়ানডে সিরিজও খেলতে হবে ভারতীয় দলকে। রাহুল তাকিয়ে আপাতত সেখানেই। তবে প্রসঙ্গক্রমে তাকে কথা বলতে হলো টেস্ট ক্রিকেট নিয়েও। এমনিতে টপ অর্ডারে ব্যাটিং করতে পছন্দ করলেও ওয়ানডেতে এখন কিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবে মিডল অর্ডারে ব্যাট করছেন রাহুল। এখন প্রয়োজনে টেস্টেও একই ভূমিকায় তাকিয়ে তিনি।
লোকেশ রাহুল বলেন, সব সংস্করণের কথা তো জানি না। এই মুহূর্তে আমার মনোযোগ ওয়ানডে সিরিজে এবং এখানে আমি একই ভূমিকা পালন করব। কিপিং করব ও মিডল অর্ডারে ব্যাট করব। এরপর… হ্যাঁ, টেস্ট ম্যাচেও এই ভূমিকা আমি খুশিমনেই নেব। নতুন ভূমিকাকে আলিঙ্গন করতে এবং দল আমার কাছে যা কিছু চায়, তা করতে আমার কখনোই আপত্তি নেই। ম্যানেজমেন্ট, কোচ ও অধিনায়ক আমাকে যা করতে বলবে, খুশি হয়েই তা করতে প্রস্তুত আছি। দল যদি আমাকে এই ভূমিকায় (টেস্ট কিপার-ব্যাটসম্যান) চায়, সানন্দেই তা করব।”
সড়ক দুর্ঘটনায় পড়ে রিশাভ পান্ত লম্বা সময় বাইরে থাকাতেই মূলত কিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলার সুযোগ তৈরি হয়েছে রাহুলের সামনে। তবে এখানে তার শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ইশান কিষান। পান্ত না থাকায় শুরুতে সুযোগটি পেয়েছিলেন শ্রিকার ভারত। তবে কিপিং ভালো করলেও তিনি ব্যাট হাতে খুব বেশি অবদান রাখতে পারেননি। ৫ টেস্ট খেলে ফিফটি করতে পারেননি একটিও। এরপর তার জায়গায় সবশেষ সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজে দুটি টেস্ট খেলানো হয় কিষানকে।
শ্রেয়াস আইয়ার চোট কাটিয়ে দলে ফেরায় ভারতের মিডল অর্ডারে বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলার সুযোগ সামান্যই। রাহুলকে তাই হয়তো লড়াই করতে হবে কিষানের সঙ্গেই। দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারতের দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শুরু ২৬ ডিসেম্বর। রোববার থেকে অনুষ্ঠেয় ওয়ানডে সিরিজে ভারতকে নেতৃত্বও দেবেন রাহুল।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ