জার্মান শিল্পী অক্সার স্ক্লেমারের শিল্প বোধ ছিল একদম ব্যতিক্রম৷ একাধারে ভাস্কর্য,স্থাপত্য,চিত্র শিল্পী অক্সার তৈরি করেছিলেন জীবনের জ্যামিতিক চিত্র৷ ছন্দের তালে সেই জ্যামিতিক ফিগারগুলি নেচে ওঠে বেশ৷ তাই অস্কার ছিলেন ১৯২২ সালের একমাত্র কোরিওগ্রাফারও৷
‘ট্রায়াডিক ব্যালেট’ নামক তার জ্যামিতিক ভাস্কর্য্যের উপর যদিও বেশিদিন নিজের অধিকার ফলাতে পারেননি এই শিল্পী৷ দেখতে দেখতেই গোটা জার্মানী যখন হিটলারময়, তখন শিল্পীস্বত্ত্বার আত্মসমর্পণ ঘটাতে বাধ্য হয়েছিলেন এই শিল্পী৷ ক্রমশই হিটলার ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েন তিনি৷ সেই অস্কার স্ক্লেমারের ১৩০ তম জন্মদিনে তাকে সম্মান জানিয়ে ডুডল বানাল গুগল৷
১৯৩৭ সালে জার্মানিতে যখন হিটলারের একচেটিয়া স্বৈরতন্ত্র স্পষ্ট হচ্ছে কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের গ্যাস চেম্বারে, তখন অসংখ্য বুদ্ধিজীবীদেরও তখন ক্যাম্পে যেতে হয়েছিল৷ একটু একটু করে সহ্য করতে হয়েছিল মৃত্যু যন্ত্রনা৷ সেভাবেই অস্কার স্ক্লেমারের শেষ ১০ বছর নিয়ন্ত্রণ ছিল হিটলারের অঙ্গুলিহিলনে৷ শিল্পীর স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিয়ে তা প্রদর্শনীতে দিয়েছিলেন হিটলার৷
১৯৩৭ সালে ন্যাৎসিদের ‘ডিজেনেরেট আর্ট’প্রদর্শনীতে অস্কারের ৫টি স্থাপত্য৷ কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের যন্ত্রণা থেকে বাঁচতে অস্কারের কাছে আর কোনও পথ ছিল না৷ বার্লিনের সেই প্রদর্শনীর মঞ্চ থেকে হিটলার ‘ক্ষমাহীন যুদ্ধের’ঘোষণা করেছিলেন৷ মঞ্চে ছিলেন অস্কারও৷
১৯৪৮ সালে মারাত্মক মানসিক যন্ত্রণা নিয়েই মৃত্যু হয় স্ক্লেমারের৷ শিল্পী অস্কার স্ক্লেমার শেষ জীবনে হিটলারের হাতের পুতুল হয়েছিলেন৷ প্রায় ১৭ মিলিয়ন ইহুদি হত্যা সহ্য করেছিলেন তিনি৷ হিটলার ঘনিষ্ঠ হওয়ার তকমা নিয়ে নিন্দার মুখেও পড়েছিলেন৷ মৃত্যুর ৫০ বছর পর অস্কারের ছবি ১.৪৮৭ মিলিয়ন অর্থে বিক্রি হয়৷ ১৩০ তম জন্মদিনে অস্কারের হৃত সম্মান ফেরাতেই গুগলের ডুডল৷
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ সিফাত তাফসীর