কর্মচারীদের আন্দোলনে টানা ১৫ ঘন্টা কার্যালয়ে অবরুদ্ধ থাকার পর প্রশাসনের হস্তক্ষেপে মুক্ত হলেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ শামসুদ্দিন। এ সময় পবিপ্রবি’র রেজিস্ট্রার প্রফেসর জেহাদ পারভেজসহ বেশ ক’জন শিক্ষকও গভীর রাত পর্যন্ত অবরুদ্ধ থাকেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার দিকে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে আন্দোলনকারীদের সাথে দফায় দফায় বৈঠকের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এরপর ভিসিসহ অন্য শিক্ষকদের সেখান থেকে উদ্ধার করে বাস ভবনে পৌঁছে দেয়।
মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে পবিপ্রবিতে চাকরি এড্হককরণের দাবিতে চতুর্থ শ্রেণীর মাষ্টাররোলের শতাধিক (নারী-পুরুষ) কর্মচারী অনশন ও অবস্থান কর্মসূচির ব্যানার নিয়ে আন্দোলনের ডাক দেয়। এক পর্যায় প্রশাসনিক ভবনের মুল কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। এতে ভাইস-চ্যান্সেলর, রেজিস্ট্রারসহ প্রশাসনিক ভবনে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আটকে পরেন। এ ঘটনায় পবিপ্রবির সকল কার্যক্রম ব্যাহত হয়। পরে পিছনের গেট থেকে কিছু কর্মকর্তা বের হয়ে যায়।
এ ঘটনায় রাতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়। রাত ১১টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাহেব আলী পাঠান, দুমকী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান সিকদার, সহকারী পুলিশ সুপার সদর সার্কেল সাইফুল ইসলাম ঘটনাস্থলে পৌঁছে ভিসির সাথে বৈঠক করেন। পরে আন্দোলনকারী কর্মচারীর পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দলের সাথে কথা বলে তাদেরকে আশ্বস্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
এদিকে ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন চাকুরী স্থায়ী না হওয়ায় বিক্ষুব্ধ মাষ্টাররোল কর্মচারীরা একাধিকবার অনশন ধর্মঘট, অবস্থান কর্মসূচি, কর্মবিরতি এবং বিক্ষোভ সমাবেশ চালিয়ে আসছেন। কোন উপায় না পেয়ে মঙ্গলবার ফের আন্দোলনের ডাক দেয় তারা।
মাস্টাররোল শ্রমিক-কর্মচারী পরিষদের সভাপতি রিপন শীল ও সাধারণ সম্পাদক জনি মুন্সী জানান, কর্মরত মাষ্টাররোল কর্মচারীদের চাকরি স্থায়ীকরণের বিষয়ে বার বার আশ্বস্ত করলেও কর্তৃপক্ষ এ যাবত কার্যকর কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। তাই কর্মচারীরা ফুসে উঠেছে।
পবিপ্রবি রেজিস্ট্রার প্রফেসর জেহাদ পারভেজ বলেন, মাস্টাররোল হিসেবে কাজ করার শুরুতে চাকরি স্থায়ীকরণের কোন শর্ত ছিল না। বর্তমানে পবিপ্রবি আইন অনুযায়ী তাদেরকে এড্হক করা যাবেনা। তবুও তাদেরকে আশ্বাস দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পর্যায়ক্রমে তাদেরকে স্থায়ীকরণ করা হবে।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. শামসুদ্দিন জানান, আন্দোলনকারীদের সাথে সমন্বয় হয়েছে। তাদের দাবি পুরণ করার লক্ষ্যে আমি নিয়োগ বোর্ডের সদস্যদের সাথে কথা বলবো। সব কিছু আমার হাতে নয়।
বিডি প্রতিদিন/২১ ডিসেম্বর ২০১৬/হিমেল