মহান বিজয়ের মাসে যুদ্ধাহত এক মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সোহেল রানাকে মারধোর করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গ্রুপের কর্মীরা।
সোমবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে লালন শাহ হলের ৩৩৫ নং রুমে ডেকে নিয়ে ৭-৮ জন ছাত্রলীগ কর্মী তাকে মারধোর করেছে বলে জানিয়েছেন ওই শিক্ষার্থী। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র এবং ঝিনাইদহ জেলার কোট চাঁদপুর উপজেলার সাব্দালপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমানের ছেলে।
সোহেল রানার জানান, সোমবার রাতে লালন শাহ হলে আমার রুমে (২৩০ নং) বসে পড়তে ছিলাম। রাত সাড়ে ৯ টার দিকে বাংলা বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র আসাদুজ্জামান আসাদ হলের ৩৩৫ নং রুমে মিটিং আছে বলে সেখানে আমাকে আসতে বলে। আমি আমার দ্বিতীয় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার কথা বললেও জরুরি মিটিংয়ে উপস্থিত থাকতে হবে বলে জানান। আমি রাত ১০ টার দিকে ৩৩৫ নং রুমে যাওয়ার পর সালাহউদ্দিন আহমেদ সজলসহ কয়েকজন আমাকে বলে তুই সভাপতি শাহিন ভাই ও সজলকে গালাগালি করছিস। এ কথা কে বলেছে, জানতে চাইলে সজলের নেতৃত্বে ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে শিহাব, আইসিই বিভাগের ১০-১১ শিক্ষাবর্ষের মিঠু কবির, আইসিই বিভাগের রুবেল হোসেন, লোক প্রশাসন বিভাগের ১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের মুস্তাফিজুর রহমান শিপনসহ ৭-৮ জন আমাকে কিল, ঘুষি, লাথি মারতে থাকে। একপর্যায়ে আমি রুমের মেঝেতে পড়ে গেলে তারা মারধোর বন্ধ করে এবং রাতের মধ্যে হল থেকে বের হয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়। পরে আমি সেখান থেকে চলে আসি। এসময় ছাত্রলীগের সভাপতি শাহিনুর রহমান শাহিন পাশের রুম ৩৩৬ নং এ অবস্থান করছিলেন বলে জানিয়েছে সোহেল রানা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক লাঞ্চনার ঘটনায় মিঠু কবির এবং রুবেল হোসেনকে সাময়িক ভাবে বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একই অপরাধে মিঠু কবিরকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়। এছাড়া সোহেল রানাকে মারধোরের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহিনুর রহমান শাহিন, ‘তাকে মারধোর করা হয়নি। তার কাছে কোন ডকুমেন্ট থাকলে সে বলুক। তবে সে আমাকে নিয়ে খারাপ মন্তব্য করায় ক্ষুদ্ধ কর্মীরা তাকে হল থেকে চলে যেতে বলেছে।’
সভাপতিকে নিয়ে খারাপ মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে সোহেল রানা বলেন, ‘আমি ছাত্রলীগ সভাপতিকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করব কেন? আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধা। তবে আমি ছাত্রলীগের অন্য গ্রুপের সাথে থাকি এটাই আমার দোষ। আমি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে বিচার চাই।’
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন বলেন, ‘বিষয়টি আমরা খোঁজ নিয়ে এ ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, ‘আমার কাছে কোন অভিযোগ আসেনি। বিষয়টি শুনে আমি খোঁজ খবর নিচ্ছি এবং কি করণীয় সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।’
বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন