প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র-টিএসসিকে নতুন করে সাজানোর পরিকল্পনা নিয়েছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। তবে, সেটি টিএসসির বর্তমান অবয়ব ভেঙে ফেলে করা হবে, নাকি বিদ্যমান অবকাঠামোয় সংস্কারের মাধ্যমে করা হবে -এ বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছুই জানাতে পারেনি গণপূর্ত অধিদপ্তর ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কেউই।
বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী জাভেদ আলম মৃধা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘কিছুদিন আগে অধিদপ্তরের প্রকৌশলীরা আসছিলেন যে আমরা কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা চাই। গত ২৭ অক্টোবর একটি বৈঠক করে আমরা তাদের একটা তালিকা দিয়েছিলাম।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, ওই তালিকায় টিএসসি’তে সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের জন্য মহড়াকক্ষ, ব্যায়ামাগার, টিএসসি-ভিত্তিক সংগঠনগুলোর জন্য কক্ষ, ক্যাফেটেরিয়া, শিক্ষক মিলনায়তন, গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য তিনতলা বিশিষ্ট স্থান, অতিথি কক্ষ, দুইটি অডিটোরিয়াম এবং সুইমিং পুল প্রভৃতির চাহিদা দেওয়া হয়েছিলো।
তবে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাঠানো তালিকাটি পাননি বলে জানিয়েছেন পিডব্লিউডি’র ঢাকা সার্কেল-১৪ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাহাবুবুর রহমান। তিনি মঙ্গলবার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘মৌখিক চাহিদা দেওয়া হয়েছে। তাদের লিখিত চাহিদা দেওয়ার জন্য আজকে চিঠি দেবো’।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠানো ওই তালিকায় টিএসসির বর্তমান অবয়ব ঠিক রাখা বা ভাঙ্গার উল্লেখ ছিলো কিনা-জানতে চাইলে জাভেদ আলম মৃধা বলেন, আমরা এমন কিছু বলিনি। আমরা আমাদের চাহিদা জানিয়েছি, ওনারা কীভাবে করবেন, সেটা তাদের বিষয়। নকশা না দিলে আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না।
এ বিষয়ে পিডব্লিউডি’ও অন্ধকারে। অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাহাবুবুর রহমান জানান, এ বিষয়ে আমরা এখনও কিছু জানিনা। স্থপতিরাও এখনও নকশা পাঠাননি।
বিষয়টি নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। তথ্যগুলো এখনো শেয়ার করার মাত্রায় আসেনি। তবে নকশা না দেখে কিছু বোঝা যাচ্ছে না। পিডব্লিউডি থেকে সেগুলো আসুক। তারপর বলা যাবে। জানুয়ারি শুরুর দিকে তারা হয়তো আসবে।
তিনি জানান, আরও দুই বছর আগে আমরা টিএসসির ফাঁকা জায়গা ব্যবহার করে একটি নকশা দিয়েছিলাম। সেটা পর্যাপ্ত সংকুলান করবে কিনা, সেটা বিবেচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি জায়গা তার ঘনিষ্টভাবে পরিচিত। তার বিশেষ মমত্ববোধ, সম্মান ও আস্থার জায়গা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। নিশ্চই সব ধরনের সদয় দৃষ্টি বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়ে যায়।
উল্লেখ্য, গ্রিক স্থপতি কন্সটান্টিন ডক্সিয়াডেস ১৯৬০ এর শুরুতে টিএসসি’র নকশা করেন। পরবর্তী সময়ে টিএসসি ভবনটি তৎকালীন সরকারের উন্নয়ন দশকের অংশ হিসাবে নির্মিত হয়েছিল।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল