শিক্ষার্থী আছে। আছে শিক্ষকও। তবে নেই নিজস্ব কলেজ ক্যাম্পাস। কক্ষ ভাড়া নিয়ে চলে শিক্ষা কার্যক্রম। শুধু তাই নয় পরীক্ষার সময়ও পাহাড় ছেড়ে যেতে হয় শহরে। শিক্ষার্থীদের বসতে হয় অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষা কেন্দ্রে। তার উপর কলেজটি জাতীয়করণ না হওয়ার শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি নানা সমস্যায় রয়েছেন শিক্ষকরাও। এটি রাঙামাটি জুরাছড়ি উপজেলার একমাত্র উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শলক কলেজ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে স্থানীয়দের উদ্যোগে রাঙামাটির জুরাছড়ি উপজেলার বনযোগী ছড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় তলার কয়েকটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে শলক কলেজটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এরপর ২০১৮ সালে শিক্ষক নিয়োগের পাশাপাশি শুরু হয় শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম। প্রায় ১২ জন শিক্ষকের সমন্বয়ে এ প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে শিক্ষার্থী আছে প্রায় ৬৭ জন। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি আর্শিবাদ হলেও রয়েছে নানা জটিলতা। জাতীয়করণ না হওয়ায় শিক্ষকদের বেতনভাতা, ক্যাম্প ভাড়াসহ শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণসহ দেখা দেয় নানামুখী সমস্যা। যদিও বর্তমানে চট্টগ্রাম উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড থেকে কলেজে তিনটি বিভাগে পাঠদানের অনুমতি মিলেছে প্রতিষ্ঠানটির। কিন্তু শলক কলেজের পরীক্ষার অনুমোদন না থাকায় শিক্ষার্থীদেরকে রাঙামাটি শহরে অন্য একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয়।
জুরাছড়ি শলক কলেজের অধ্যক্ষ মলিনা চাকমা জানান, রাঙামাটি শহর থেকে বেশে দুর্গম উপজেলা জুরাছড়ি। সড়ক পথ না থাকায় নদীপথে যেতে হয় রাঙামাটি শহরে। এ অঞ্চল থেকে রাঙামাটি শহরে যাতায়াত করে পড়া লেখা করা স্থানীয় শিক্ষার্থীদের জন্য খুবই কষ্টের। শুধু তাই নয়। অর্থের প্রয়োজনও আছে। জুমিয়া পরিবারের সন্তানদের এতো টাকা খরচ করে রাঙামাটি শহরে গিয়ে পড়ালেখা করা আসলেই অসম্ভব। তাই অনেকেই মাঝ পড়ায় ঝড়ে পরে। তাই স্থানীয় শিক্ষানুরাগীরা এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি তৈরি করেছে।
জুরাছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও শলক কলেজ কমিটির সভাপতি সুরেশ কুমার চাকমা জানান, আমরা চাই পাহাড়ের সুবিধা বঞ্চিত ছেলে-মেয়েরা ঘরে বসে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাক। তাই এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি চালু করা। তবে সরকারি সুযোগ সুবিধা না পাওয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ক্রমেই মুখ থুবড়ে পড়ছে। জাতীয়করণ করা হলে একই সাথে নিজস্ব কলেজ ক্যাম্পাস হলে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে। শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হবে না পাহাড়ের ছেলে মেয়েরা।
রাঙামাটি ১০টি উপজেলার মধ্যে শুধু জুরাছড়ি ও বিলাইছড়ি উপজেলায় কোন সরকারি কলেজ নেই। তাই এ দু’উপজেলার শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় পর্যন্ত পড়ালেখা করলেও উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে না। দরিদ্র পরিবারগুলোর ক্ষমতা নেই নদী পথ পাড়ি দিয়ে রাঙামাটি শহরের পড়ালেখা করার।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল