বর্ণিল আয়োজনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) মহান বিজয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। শুক্রবার ভোরে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন শুরু হয়। সকাল পৌনে ৭টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, বদ্ধভূমি ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বেলা ১১টার দিকে সিনেট ভবনে আলোচনা সভায়। এতে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান করা হয়।
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক হুমায়ুন কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক অবায়দুর রহমান প্রামানিক এবং মুখ্য আলোচক ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক।
মুখ্য এই আলোচক বলেন, পাকিস্তান শাসনামলে এদেশে প্রগতিশীল সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চা সহজ ছিল না। কেননা এ ক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত দমন-পীড়নমূলক। তখন বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এদেশের মানুষ মুক্তির ডাক দেন। কারণ আমাদের মুক্তিযুদ্ধ শুধু ভূখণ্ড বা জাতিসত্তার স্বাধীনতার জন্য ছিল না। তাতে সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির স্পৃহা অন্যতম চালিকাশক্তি ছিল। তাই এ মুক্তিযুদ্ধ বিশ্ব দরবারে সাড়া জাগিয়েছিল। ফলে দীর্ঘ নয় মাস পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে বিজয় ছিনিয়ে আনতে সক্ষম হয় বীর বাঙালি মুক্তিযোদ্ধারা। এই বিজয় সর্বদা সম্মান ও গৌরবের।
এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালার অবদানের কথা তুলে ধরেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রতিষ্ঠায় এই সংগ্রহশালা বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত করেছে বলে জানান তিনি।
উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, ক্ষণজন্মা মুক্তিযোদ্ধারা ক্ষণিকের জন্য পৃথিবীতে এসে প্রভা ছড়িয়ে গেছেন। তাদের আলোয় আমরা আলোকিত হচ্ছি। স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন তারা।
তিনি বলেন, একটি জাতির ইতিহাসে ভাষা যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে সেটা বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন। তাই বিভিন্ন অবস্থা বিশ্লেষণ করে বাঙালির স্বাধীনতার স্পৃহাকে মুক্তিযুদ্ধের পথে ধাবিত করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। ফলে পাকিস্তানের জুলুম নির্যাতনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে বাঙালি ছিনিয়ে আনতে পেরেছিল লাল সবুজের পতাকা। আজ তারই কন্যার কুশলী নেতৃত্বে জাতি এগিয়ে যাচ্ছে। দেশ ধাবিত হয়েছে উন্নয়নের এক বিস্ময়কর অগ্রযাত্রায়। তাই এসব মহান মানুষদের ত্যাগ ও আদর্শের কথা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান উপাচার্য।
এদিকে দিবসটি উপলক্ষে ক্যাম্পাসে স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, শেখ কামাল স্টেডিয়ামে খেলা শিক্ষক, অফিসার ও কর্মচারীদের বিভিন্ন খেলাধুলা, কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া, বিকেলে কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোটের গান, কবিতা, নাটকের আয়োজন এবং সন্ধ্যায় টিএসসিসিতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ