প্রকৃতিতে শীতের হাওয়া বইছে। সাথে উত্তরের হিমালয়ের অঞ্চল থেকে আসছে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি। তবে এসব অতিথি পাখির আগমনে নেই কোনো প্রস্তুতি। বলছিলাম, পরিযায়ী পাখির নিরাপদ আবাসস্থল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) কথা। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে প্রতিবছর অতিথি পাখিদের নিরাপদ অভয়ারণ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলেও এবছর এখনো নেওয়া হয়নি।
লেকের পাড়ে কাঁটাতারের বেড়া প্রদান, সচেতনতামূলক ব্যানার টানানো, লেকপাড়ে যানবাহন পার্কিং রোধে ব্যবস্থা নেওয়া, জলাশয়ের কচুরিপানা ও আবর্জনা পরিষ্কারের মতো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সরেজমিন দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৯টি জলাশয়ের মধ্যে ১০টি জলাশয় ময়লা-আবর্জনা ও কচুরিপানায় প্রায় পুরোপুরি ভরাট হয়ে গেছে। বাকি জলাশয়গুলোতে পানি থাকলেও জলজ আগাছায় ছেয়ে গেছে। যেগুলোতে পাখি বসবাসের উপযোগী নয়। তবে চলতি মাসে পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের পশ্চিম পাশের লেকে এবং সংরক্ষিত ডব্লিউআরচি’র পুকুরে প্রায় ৫ শতাধিক অতিথি পাখি এসেছে। সেখানে পাখি দেখতে নিয়মিত ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা। তাদের পাখি উড়াতে বোতল, ইট-পাথর নিক্ষেপ করতে দেখা গেছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর কম পাখি আসায় হতাশা প্রকাশ করেন তারা।
সাধারণত, অক্টোবরের শুরুর দিকে জাবির লেকগুলোতে অতিথি পাখি আসা শুরু করে। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ জলাশয় পরিণত হয় অতিথি পাখির অভয়ারণ্যে। তবে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত সর্বোচ্চ সংখ্যক অতিথি পাখি তুষারপাতের ফলে সাইবেরিয়া, চীনের জিনজিয়াং, মঙ্গোলিয়া, নেপাল হতে আসে বলে জানা যায়।
পাখি বিশেষজ্ঞ ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কামরুল হাসান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও শীত কম থাকার কারণে পাখিদের আগমন কম দেখা যাচ্ছে। তবে পাখির নিরাপদ আবাসস্থলের ব্যবস্থা না থাকাটাও এর জন্য দায়ী। পাখির সুরক্ষায় প্রশাসনের যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ ব্যবস্থাপনা শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার আব্দুর রহমান বাবুল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, অন্য বছরগুলোতে অতিথি পাখির আগমনে জলাশয় ও লেক সংস্কারের জন্য কিছু অর্থের বরাদ্দ থাকতো। এবছর কোনো টাকা বরাদ্দ না থাকায় ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি।
বিডি প্রতিদিন/এমআই