রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ব্যবসা প্রশাসন ইনস্টিটিউটের সিলেবাস পুনর্বহালের আন্দোলনে ব্যবসা প্রশাসন ইনস্টিটিউটের শিক্ষক শাহেদ পারভেজের বিরুদ্ধে উসকানি প্রদানের অভিযোগ উঠেছে। তিনি ইনস্টিটিউট থেকে সাময়িক বহিষ্কৃত। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সাউদ ও প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ তুলেছেন।
তারা জানান, ১৮ ডিসেম্বর ইনস্টিটিউটের কিছু শিক্ষার্থী সিলেবাস পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছে। সেদিন তাদের দাবি শুনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আস্বস্ত করা হয় এবং তাদেরকে ইনস্টিটিউটের পরিচালকের নিকট দাবি জানাতে বলা হয়৷ এছাড়াও বলা হয়, এটা একটি প্রক্রিয়াগত কাজ। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু আজকে শিক্ষার্থীরা আবার আন্দোলন করে। তখন ইনস্টিটিউটের শিক্ষক শাহেদ পারভেজ সেখানে যুক্ত হন এবং শিক্ষার্থীদের উসকানি দিয়ে মিস গাইড করতে থাকেন।
তারা অভিযোগ করে বলেন, ‘তিনি প্রক্টরিয়াল বডির সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছেন। এমনকি ইনস্টিটিউটের পরিচালক সম্পর্কে মন্তব্যে বলেন, ‘তিনি ইনস্টিটিউটে শিক্ষকদের দিয়ে সবজি চাষ করছেন। শিক্ষক হয়ে শিক্ষকের সঙ্গে এমন আচরণ খুবই গর্হিত।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৫২৭ তম সিন্ডিকেট সভার ১৯ নম্বর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী- ব্যবসা প্রশাসন ইনস্টিটিউটের প্রভাষক এ টি এম শাহেদ পারভেজ-এর মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত রাখার সিদ্ধান্ত হয়।
অভিযোগের বিষয়ে শাহেদ পারভেজ বলেন, আমি কোনো শিক্ষকের সঙ্গে অশোভন আচরণ কিংবা আন্দোলনে উসকানি দেইনি। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে আমি সেখানে গিয়েছি। তাছাড়া বহিষ্কারের আদেশ আমি এখনও হাতে পাইনি।
ইনস্টিটিউটের নতুন সিলেবাস অনুসারে, কোর্স শিক্ষক সংশ্লিষ্ট বর্ষের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ও নম্বর মূল্যায়ন করতে পারবেন। তবে পরবর্তীতে সেটা মডারেশন (তৃতীয় পক্ষ) বোর্ডের অধীনে পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন হবে। তবে পূর্বে নিয়ম ছিল, কোর্সের যে শিক্ষক ক্লাস নিতেন তিনিই প্রশ্ন করতেন এবং নম্বর মূল্যায়ন করে ফলাফল দিতেন।
সিলেবাসের ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার আসলাম হোসেন জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বিভাগের সঙ্গে মিল রেখে ব্যবসা প্রশাসন ইনস্টিউটের সিলেবাস তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে একাডেমিক কাউন্সিলেরও সম্মতি ছিল। তাছাড়া এই নিয়ম অনুসারে সংশ্লিষ্ট কোর্স শিক্ষকের পক্ষপাতের সুযোগ খুবই কম। ফলে ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন উঠার সম্ভাবনা থাকে না।
শিক্ষার্থীদের একাংশের দাবি, ইনস্টিটিউটের বর্তমান সিলেবাস বাতিল এবং পূর্বের সিলেবাস পুনর্বহাল করা। এতে বিভাগের স্বতন্ত্রতা বজায় থাকবে এবং নতুন কোনো জটিলতা সৃষ্টি হবে না।
সার্বিক বিষয়ে ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক জিনাত আরা বেগম জানান, এই শিক্ষার্থীরা কেন এভাবে আন্দোলন করছে আমি বুঝতে পারছি না। তাদের যদি কোনো দাবি-দাওয়া থাকে সেটা একটা প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে সমাধান হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্তে এ সিলেবাস হয়েছে। এটা এখনই পরিবর্তনের সুযোগ নেই।
শিক্ষকের আন্দোলনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, কোনো শিক্ষকের এভাবে আন্দোলন করা যথাযথ মনে করি না। তার কথা বলার জায়গা ওটা না। তাছাড়া শাহেদ পারভেজকে প্রভাষক পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল