রাজধানী ঢাকায় শুরু হয়েছে ওপেন হেরিটেজ উইক-২০১৯। দ্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর কালচার, ইউনিক, ইইউ প্রতিনিধি দল, স্পেন দূতাবাস, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, বুলবুল ললিতকলা একাডেমি এবং ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্টস বাংলাদেশ যৌথভাবে এ হেরিটেজ উইক উদযাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
আয়োজনটি ৬ ডিসেম্বর শুরু হয়েছে এবং ঢাকার বিভিন্ন স্থানে নানা আয়োজনের মাধ্যমে ১৫ ডিসেম্বর শেষ হবে। ঐতিহ্যবাহী পুরান ঢাকাকে কেন্দ্র করে, বিভিন্ন রকমের পারফর্মেন্স আর্টস, প্রদর্শনী, কর্মশালা, বক্তৃতা এবং ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা দর্শনের ব্যবস্থা থাকছে সমস্ত আয়োজন জুড়ে। পুরান ঢাকার লালকুঠি, বিউটি বোর্ডিং এবং বুলবুল ললিতকলা একাডেমি-এই তিন স্থানে এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন তার উদ্বোধনী বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। এছাড়া বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত হিজ এক্সেলেন্সি রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন, জার্মান রাষ্ট্রদূত হিজ এক্সেলেন্সি পিটার ফারেনহল্টজ, ফ্রেঞ্চ রাষ্ট্রদূত হিজ এক্সেলেন্সি জিন-মেরিন শুহ, স্পেনের রাষ্ট্রদূত হিজ এক্সেলেন্সি আলভারো দো সালাস এবং বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বর্তমান রাষ্ট্রদূত হিজ এক্সেলেন্সি রেন্স টিরিঙ্ক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের ডেপুটি ডিরেক্টর অ্যান্ড্রু নিউটন, অলিয়াস ফ্রসেজ ঢাকার ডিরেক্টর অলিভিয়ের ডিনটিঙ্গার এবং গ্যেথে ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের ডিরেক্টর কারস্টেন হ্যাকেনব্রচ।
সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং সবার কাছে সহজে উপস্থাপনের লক্ষ্য নিয়ে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধনের উদ্দেশ্যে ইন্টারন্যাশনাল কালচারাল এক্সচেঞ্জ সেন্টারগুলোর এই আয়োজন। ইউনিকের তথ্যমতে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে ভরপুর এবং এগুলোতে জনগণ সহজেই যেতে পারে। এরপরও এদেশের ঐতিহ্যবাহী কিছু স্থাপনা অবহেলিত এবং ক্রমবর্ধমান আবাসন শিল্পের কারণে এগুলো হুমকির মুখে রয়েছে। মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি এবং বাংলাদেশের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে এই শহরকে নতুন করে তুলে ধরতে চায় ইউনিক।
এ উপলক্ষে গ্যেথে ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের ডিরেক্টর ড. কারস্টেন হ্যাকেনব্রচ বলেন, ওপেন হেরিটেজ উইক ২০১৯ কেবল একটি সূচনা হিসেবে দেখছি আমরা। ঐতিহ্যবাহী এই এলাকাগুলো শুধুমাত্র বাৎসরিক ভিত্তিতে উন্মুক্ত থাকুক সেটা আমরা চাই না। বরং এগুলোকে জনগণের জন্য খুলে দিতে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং জমির মালিকদের নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা আছে আমাদের। এর ফলে স্থানীয়রা তাদের আশেপাশে ছড়িয়ে থাকা পুরোনো ঐতিহ্যের সাথে পরিচিত হয়ে ঢাকার অন্য মানুষদেরও তাদের সাংকৃতিক এবং পরিবেশগত ঐতিহ্য বিনির্মানে যুক্ত করতে সমর্থ হবে। এ ধরণের আয়োজন ঢাকার মানুষকে তাদের সম্মৃদ্ধ সাংস্কৃতিক এবং স্থাপত্য সংক্রান্ত ঐতিহ্যের সাথে পরিচয় ঘটাবে।
ব্রিটিশ কাউন্সিলের ডেপুটি ডিরেক্টর অ্যান্ড্রু নিউটন বলেন, ‘ঐতিহ্যকে বদ্ধ ঘরে না রেখে তা সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া উচিত।’ পাশাপাশি পুরান ঢাকার সমৃদ্ধ ইতিহাস কিভাবে পারিপার্শ্বিক অবস্থা, সামাজিক, ধর্মীয়, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক দিক দিয়ে প্রভাব বিস্তার করেছে তার উপর একটি আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ব্রিটিশ কাউন্সিল। যা সোমবার ৯ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে পাঁচটায় শুরু হবে। ১৫ ডিসেম্বর বুলবুল ললিতকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে একটি কাওয়ালি পরিবেশনার মধ্য দিয়ে 'ওপেন হেরিটেজ উইক-২০১৯' এর আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক