ছোট্ট একটি শব্দ স্বপ্ন। ছোট হলেও এর গুরুত্ব অনেক অনেক বেশি। প্রতিটি নিঃশ্বাসকে মানুষ অনুভব না করলেও স্বপ্ন ছোঁয়ার অনুভূতিকে অনুভব করতে চায় প্রতিটি ক্ষণ। আর তাই স্বপ্ন পূরণে মানুষ ছুটে চলে অবিরাম। কিন্তু সাধ আর সাধ্যের মাঝের দেয়ালটা যখন বাস্তবতা হয়ে দাঁড়ায় তখন সেই স্বপ্ন পূরণ কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। ফলে সেই স্বপ্ন কখনো পূরণ হয় কখনো বা অধরাই থেকে যায়। কিন্তু বুদ্ধিমানের জন্য স্বপ্ন যাত্রাটা মসৃণ বলেই মনে হয়। কেননা সে সঠিক পথটাই বেছে নেয়।
কথাগুলো বলছিলেন আইডিএলসির ম্যানেজিং ডিরেক্টর আরিফ খান। তিনি বলেন, কোটি মানুষের কোটি স্বপ্ন কিন্তু কিছু স্বপ্ন আছে যেটা খুব কমন। এই যেমন নিজের বাড়ির স্বপ্ন। স্বল্প আয়ের মানুষের কাছে বাড়ি সত্যি একটি স্বপ্ন। তবে চিন্তা নেই আপনার স্বপ্ন পূরণে পাশে আছে আইডিএলসি। স্বল্প আয়ের মানুষের বাড়ির স্বপ্ন আমরা পূরণ করবো। কোনো ধরনের ঝক্কি-ঝামেলা ছাড়াই 'Affordable Home Loan' আপনার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেবে।
বেসরকারি চাকরিজীবী শাহ আলম। আইডিএলসির এমডির উদ্দেশে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন। বললেন, 'Affordable Home Loan'-কনসেপ্টটি কোন চিন্তা থেকে আসলো? বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে এই প্রোডাক্টের ভূমিকা কি?
শাহ আলমের প্রশ্নের জবাবে আইডিএলসির এমডি বলেন, একটা ছোট্ট পরিসংখ্যান বলি, শুধুমাত্র ঢাকা শহরেই প্রায় ৮০% মানুষ ভাড়া বাসায় থাকে, তাহলে ভাবুন দেশের অন্নান্ন এলাকার কি অবস্থা ? ভাড়া বাসায় থাকা এসব স্বল্প আয়ের মানুষের মধ্যে প্রায় সবাই ২০ থেকে ৬০ হাজার টাকা মাসে আয় করে, আবার যার ৬০ শতাংশই প্রতি মাসে বাসা ভাড়া হিসেবে খরচ করতে হয়। আইডিএলসি ফাইন্যান্স এই স্বল্প আয়ের মানুষেরা যাদের নিজস্ব জমি আছে কিন্তু বাড়ি বানানোর মতো সামর্থ নাই তারা যেন ভাড়া বাসায় না থেকে তাদের নিজস্ব বাড়ি তৈরী করতে পারে সে লক্ষেই তুলনামূলক কম ইন্টারেস্ট রেট এ 'Affordable home loan' প্রোডাক্টটি নিয়ে আসে। এই প্রোডাক্টটি দেশের সাধারণ মানুষের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটেও ব্যাপক ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করছি।
'Affordable Home Loan'-নিয়ে IDLC-এর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি? সরকারি চাকরিজীবী রাবেয়া খাতুনের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'Affordable home loan' নিয়ে আইডিএলসি ফাইন্যান্স এর প্রাথমিক লক্ষ্য হলো সীমিত আয়ের মানুষের জন্য প্রোডাক্টটি দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়া। জেলা শহরগুলোতে দেখা যায় মানুষের বাড়ি করার জন্য উপযুক্ত জমি থাকা সত্ত্বেও স্বল্প আয়ের হওয়ার কারণে তারা তাদের স্বপ্নের বাড়ি তৈরি করতে পারে না। এদিকে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোও নির্দিষ্ট পরিমাণ মাসিক আয় না থাকলে লোন দিতে চায় না। এই সমস্যা অনুধাবন করে আইডিএলসি ফাইন্যান্স চায় দেশের সর্বত্র এই পণ্যটি ছড়িয়ে দিতে এবং আপামর জনগণের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা পালন করতে।
Financial Brand এবং ডেভেলপার কোম্পানিগুলো একসঙ্গে বিভিন্ন প্রোডাক্ট সমন্বিতভাবে পরিচালনা করে থাকে, আপনাদের কি কোনো ডেভেলপার কোম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে এই কনসেপ্টটি নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি বলি আইডিএলসি ফাইন্যান্স এর ডেভেলপার রিলেসনশিপ ম্যানেজমেন্ট নামে একটি ভিন্ন ডিপার্টমেন্ট আছে যারা ঢাকা এবং চট্টগ্রাম এ বিভিন্ন ডেভেলপার কোম্পানির সাথে একত্রিত হয়ে কাজ করে আসছে।
সাধারণ মানুষের আয়ের সীমা, বাজারে যথোপোযুক্ত আবাসনের দাম এবং সাশ্রয়ী নির্মাণ কৌশলের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব আছে কিনা? এ প্রসঙ্গে আইডিএলসির এমডি বলেন, অনেক আগে থেকেই দেশে নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় সীমার তুলনায় অনেক বেশি। এখানে আবাসন খাত ও ব্যাঙ্ক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান গুলোকে সমন্বিতভাবে একটি সহজলভ্য সমাধাসনের লক্ষে কাজ করতে হবে। আইডিএলসি ফাইন্যান্স এর পক্ষে একা এই বিপুল পরিমাণ চাহিদা মিটানো সম্ভব নয়। এখানে সরকারি ব্যাংকসহ প্রাইভেট ব্যাংকগুলোকে আরো অনেক কাজ করতে হবে যেখানে মানুষের আয়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখে লোন এর পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে এবং আবাসন খাতকে সাশ্রয়ী নির্মাণ উপকরণের পর্যাপ্ততা নিশ্চিত করতে হবে।
'Affordable Home Loan' প্রোডাক্টের সফলতার সম্ভবানা বা কেন সফল হবে-এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বাংলাদেশ মোট জনসংখ্যার অনেক বড় একটি অংশ স্বল্প আয়ের মধ্যে পরে, যারা তাদের সারা মাসের আয় থেকে প্রয়োজনীয় খরচ নিবারণের পর স্বল্প কিছু পরিমান অর্থ সঞ্চয় করতে পারে যা একটি বাড়ি বানানোর জন্য কখনোই পর্যাপ্ত হয়ে উঠে না। এদিকে বাড়ি তৈরী করার জন্য যে নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য স্বল্প আয়ের এসব মানুষের হাতের নাগালের বাহিরেই থেকে যায়। আমরা এই প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে এই পণ্যটি নিয়ে এসেছি যার মাদ্ধমে তুলনামূলক কম ইন্টারেস্ট রেট এ সর্বোচ্চ ২৫ বছর পর্যন্ত ঋণ দিয়ে থাকি।
বিডী-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ