সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার প্রসারের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। পৃথিবীর কোন দেশে বিনামূল্যে এতদূর পর্যন্ত শিক্ষা অর্জন করা সম্ভব হয় না, যা বাংলাদেশে হচ্ছে। তিনি বলেন, বর্তমানে জিপিএ-৫ নিয়ে অভিভাবকরা খুবই ব্যস্ত, যাকে আমি বলি জিপিএ-৫ শিক্ষার্থীদের যন্ত্রণা। টাকা উপার্জন করার একমাত্র উপায় কি পড়ালেখা করা? চাকরি করেই যে শুধু টাকা অর্জন করা সম্ভব তা নয়। খেলাধুলা, গান ইত্যাদির মাধ্যমেও টাকা আয় করা সম্ভব। আজ দুপুরে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার চিৎলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা গুলো বলেন।
মন্ত্রী আরো বলেন, যে এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই, সেই এলাকার মানুষের মধ্যে শিক্ষার আলো থাকে না। ফলে সেই অন্ধকার মনে জঙ্গিরা জায়গা করে নিচ্ছে। যা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রতিরোধ করতে পারে না। যে সাম্প্রদায়িক শক্তি ৭১ এবং ৭৫ হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল, প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার জন্য গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল। তারাই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে বাসে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারে, সেই শক্তিই জঙ্গিবাদের জন্ম দিচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, শুধু জয় বাংলা স্লোগান দিয়েই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে না। তার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে হৃদয়ে বঙ্গবন্ধুকে ধারণ করতে হবে। তা যদি আমরা না করতে পারি তাহলে নিজেকে বঙ্গবন্ধুর সৈনিক হিসেবে দাবি করতে পারিনা। তিনি বলেন, ধর্মের নামে একাত্তরের পরাজিতরা জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে এই দেশকে পিছিয়ে দিতে চাই। তাই সকলকে সজাগ থাকতে হবে। প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছেন। তাদের মুখে একমুঠো খাবার তুলে দিচ্ছেন। অথচ ধর্মের নামে এ দেশের অনেক স্থানে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা করছে। তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা এবং সুবর্ণ জয়ন্তী ও পুনর্মিলনী কমিটির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর এপিএস সাইফুজ্জামান শিখর বলেন, শেখ হাসিনা ভালো থাকলে এই দেশ ভালো থাকবে। এই জাতি ভালো থাকবে। তিনি বলেন, অতীতে সরকার নানা দুর্নীতিতে জড়িত ছিল। কিস্তু বর্তমান সরকার কোন দুর্নীতির সাথে জড়িত নাই। তিনি দেশের জন্য জননেত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে ছাত্রলীগকে ভূমিকা রাখার আহবান জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য দেন, মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরহাদ হোসেন, মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনের সংসদ সদস্য মকবুল হোসেন, সংরক্ষিত-৭ আসনের সংসদ সদস্য সেলিনা আক্তার বানু, জেলা প্রশাসক পরিমল সিংহ, প্রধানমন্ত্রীর এপিএস সাইফুজ্জামান শিখর, পুলিশ সুপার আনিছুর রহমান, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মালেক, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেক।
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র রাশেদুল ইসলাম পল্লবের সঞ্চলনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, কথাসাহিত্যিক রফিকুর রশিদ, চিৎলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফসার আলী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন, সুবর্ণ জয়ন্তী ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় অবদান এবং যারা শিক্ষকতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে গেছেন তাদের সকল ব্যাক্তিকে স্বরণ করা হয় এবং সম্মাননা প্রদান করা হয়।
এর আগে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর চিৎলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পৌছালে তাকে ফুল ছিটিয়ে বরণ করে বিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থীরা। সম্মাননা ও আলোচনা শেষে স্মৃতিচারণমূলক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার