ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বোমা হামলা মামলার অন্যতম আসামি এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবির বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান আবু সাঈদ ওরফে তালহা ওরফে শ্যামলকে (৩৫) বিদেশি পিস্তলসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়। সেখানে ১০ দিনের রিমান্ডের নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ।
শুক্রবার রাত ১টায় বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার ওমরপুর হাট এলাকা থেকে ডিবি পুলিশ মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি আবু সাঈদকে গ্রেফতার করে। তার প্রকৃত নাম আবু সাঈদ হলেও সে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নামের পরিচয় দিয়ে আসতো। ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর সে নিজের নাম শ্যামল বলে পরিচয় দিতো।
শনিবার দুপুরে বগুড়ার পুলিশ সুপার মোঃ আসাদুজ্জামান বিপিএম (এডিশনাল ডিআইজিতে পদন্নতি) তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে জানান, সাঈদ ভারতের পশ্চিম বঙ্গের বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বোমা হামলার অন্যতম অভিযুক্ত। তার কাছ থেকে গুলিসহ একটি বিদেশী নাইন এমএম পিস্তল, ৮ রাউন্ড গুলি, ধারালো অস্ত্র ও রেজিষ্ট্রেশনবিহীন একটি মোটরসাইকেল পাওয়া যায়। গ্রেফতারকৃত সাঈদ ২০০২ সালে জেএমবিতে যোগ দিয়ে ২০০৪ সালে রাজশাহী জেলার সামরিক দায়িত্ব পালন করে। ওই বছরে শায়খ আব্দুর রহমান ও বাংলা ভাইয়ের সাথে কথিত সর্বহারা নিধনে অংশগ্রহণ করে।
২০০৫ সালে নওগাঁ জেলার দায়িত্ব লাভ করে এবং ওই বছরের ১৭ আগষ্ট সারাদেশে বোমা বিস্ফোরণের সময় তার নেতৃত্বে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় জেএমবি। ২০০৭ সালে সে ভারতে পালিয়ে যায়। ২০০৯ সালে সে মুর্শিদাবাদ জেলার জেএমবির সদস্য ইয়াদুল এর মেয়ে খাদিজাকে বিয়ে করে এবং সেখানেই জেএমবির কার্যক্রম পরিচালনা করেন। ২০১০ সালে ভারতের নদীয়া জেলার এবং ২০১২ সালে এসে বীরভূম ও বর্ধমান জেলারও দায়িত্ব গ্রহণ করে।
২০১৪ সালে ২ অক্টোবর বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বোমার হামলার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। এই ঘটনায় কলকাতার ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি আবু সাঈদকে ধরিয়ে দিতে ১০ লাখ রুপির ঘোষণা দেয়। ২০১৫ সালে আবারো সে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। ২০১৭ সালের শুরুতে দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান ও শুরা সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পায়। বগুড়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে। এই অভিযানে সহায়তা করে পুলিশ হেডকোয়ার্টারের ইনটেলিজেন্স শাখা।
বিডি প্রতিদিন/৩০ ডিসেম্বর ২০১৭/হিমেল