পাবনায় নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ভিতর থেকে বাইরে বের হওয়ার সময় একটি ট্রাকসহ প্রায় ১০ মেট্রিক টন লোহা (রড ও পাইপ) জব্দ করা হয়েছে। এ সময় পাচারে জড়িত অভিযোগে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদকসহ পাঁচ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান লোহাসহ ট্রাক জব্দ ও পাঁচজনকে আটকের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
আটকরা হলেন, পাকশী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিরাজ আলী (৩৪), লক্ষ্মীকুন্ডা গ্রামের রুবেল ইসলাম রাজন (৩৭), ঠাকুরগাঁও জেলার আরাজী মাটিগাড়া গ্রামের মাজহারুল ইসলাম সাদ্দাম (২৮), ঈশ্বরদীর বাঘইল স্কুলপাড়ার কামরুল হাসান রাসেল (৩৭) ও নাটোরের বনপাড়ার বাহিমালি গ্রামের আবুল কালাম (৩৮)।
সোমবার রাতে রূপপুর পুলিশ ফাঁড়িতে জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদের ঈশ্বরদী থানায় নেওয়া হয়েছে। কয়েকমাস আগে স্থানীয় সংসদ সদস্যের ছেলেরও এমন একটি চালান ধরা পড়েছিল।
রূপপুর পুলিশ ফাঁড়ি সূত্রে জানা যায়, রূপপুর প্রকল্পের ভিতর থেকে গেট দিয়ে বের হওয়ার সময় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা একটি ট্রাকসহ প্রায় ১০ মেট্রিক টন লোহা আটক করে। কাগজপত্র দেখাতে না পারায় নিরাপত্তা সদস্যরা ট্রাকচালক আবুল কালাম আজাদকে আটক করে। এক পর্যায়ে তিনি জড়িত আরও চার জনের নাম প্রকাশ করেন। অন্যরা তখন রূপপুর প্রকল্পের আশপাশে ছিলেন। কৌশলে তাদের চার জনকে আটক করে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। পরে রাত আনুমানিক ১০টার দিকে রূপপুর পুলিশ ফাঁড়িতে ট্রাক ও লোহাসহ পাঁচ জনকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
পুলিশ আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করে সন্তোষজনক জবাব ও লোহার বৈধ কাগজপত্র পায়নি। এ অবস্থায় রাত ১২টার দিকে পাকশীর রূপপুর ফাঁড়ি থেকে তাদের ঈশ্বরদী থানা পুলিশ হাজতে নেওয়া হয়।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান বলেন, আমরা শুনেছি অবৈধভাবে, কোনো কাগজপত্র ছাড়াই ট্রাকে লোহাগুলো গোপনে রূপপুর প্রকল্পের বাইরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এর মধ্যে লোহার রড ও কিছু পাইপ রয়েছে। সব মিলিয়ে মালামাল সাড়ে ৯ মেট্রিক টনের কিছুটা বেশি হবে।
ওসি আসাদুজ্জামান আরও বলেন, রূপপুর প্রকল্প দেশের একটি বৃহৎ উন্নয়নমূলক প্রকল্প। এর সার্বিক নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিক সেনাসদস্য, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার রয়েছে। এ অবস্থায় প্রকল্পের ভিতর থেকে অবৈধভাবে লোহা নিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সদস্যদের সন্দেহ হয়। পরে তারা ট্রাক বোঝাই লোহাসহ ও পাঁচ জনকে আটক করে থানায় হস্তান্তর করেছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি।
আটকরা কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। কাগজপত্র, ট্রাকের চালানসহ প্রয়োজনীয় অনুমোদন না দিতে পারলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরে এ প্রকল্পের লোহা ও রড চুরি হচ্ছে। কয়েক মাস আগে স্থানীয় সংসদ সদস্যের ছেলেরও এমন একটি চালান ধরা পড়লে ব্যাপক সমালোচিত হয়।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর