জাল মেডিকেল সনদ দাখিল করে আদালতে মামলা করায় বাদীকে ৪ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। বরিশাল অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. মাসুম বিল্লাহ বুধবার দুপুরে পৃথক দুই ধারায় তাকে এই দন্ডাদেশ দেন। দন্ডপ্রাপ্ত লুৎফর রহমান বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার রূপারজোর এলাকার জয়নাল সরদারের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় লুৎফর আদালতে উপস্থিত ছিল। পরে তাকে পুলিশ প্রহরায় কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
তার বিরুদ্ধে ২৮ অক্টোবর ওই আদালতে মামলা দায়ের করেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩য় বিচার আদালতের বিচারক এস এম মাহফুজ আলম।
আদালত সূত্র জানায়, গত ৪ এপ্রিল বরিশাল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩য় বিচার আদালতে একটি নালিশী দায়ের করেন লুৎফর রহমান। অভিযোগে তিনি তার ভাবী রেহেনা বেগমকে ওই বছরের ৩০ মার্চ অভিযুক্ত ৫ ব্যক্তি মারধর করে বলে উল্লেখ করেন। মামলায় মারধরের প্রমাণস্বরূপ শের-ই বাংলা মেডিকেলের চিকিৎসক ডা. মাহবুবুর রহমান নামে সাক্ষর করা একটি মেডিকেল সনদ দেন তিনি। তদন্ত কর্মকর্তা ব্যতিত ভিকটিমের মেডিকেল সনদ পাওয়ার বিধান না থাকায় ওই মেডিকেল সনদে আদালতের সন্দেহ হয়। বাদী লুৎফর রহমান নিজ হাতে ওই সনদ সংগ্রহ করেছেন বলে আদালতকে জানান। সনদ যাচাই করতে শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালকে নির্দেশ দেন আদালত। পরে পরিচালকের নির্দেশে শেবাচিমের ডা. মাহবুবুর রহমান আদালতে একটি প্রতিবেদন দেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, ওই মেডিকেল সনদের সাক্ষর ও সিল তার নয়। কোন ভিকটিমকে সরাসরি মেডিকেল সনদ দেয়া হয় না বলেও ওই প্রতিবেদনে মতামত দেন ডা. মাহবুব। প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে লুৎফরের মেডিকেল সনদ জাল বলে প্রমাণ পায় আদালত।
আদালতে মিথ্যার আশ্রয় নেয়ার ঘটনায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এসএম মাহফুজ আলম অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন আদালতে পেনাল কোড ১৮৬০ এর ৪৬৬, ৪৬৮ ও ৪৭১ ধারার অভিযোগ দাখিল করেন। অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে অভিযুক্ত লুৎফুর রহমানকে ওইদিনই কারাগারে প্রেরনের নির্দেশ দেন। মামলার চার্জগঠন শেষে ৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহন করেন আদালত। এতে তার বিরুদ্ধে মেডিকেল সনদ জালিয়াতির অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় আদালত ৪৬৬ ধারায় ২ বছর দন্ড ও ৩ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাসের কারাদন্ড এবং ৪৭১ ধারায় ২ বছর দন্ড ও ৩ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৩ মাসের দন্ডাদেশ দেন।
বিডি প্রতিদিন/এএম