পাইরেসি রোধ
ভিডিও পাইরেসি রোধে সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে। যুগোপযোগী আইন প্রণয়ন এবং এর কঠোর প্রয়োগ চলচ্চিত্র শিল্পকে সুরক্ষা দেবে। সুতরাং চলচ্চিত্রের উন্নয়ন ও বিকাশে প্রথমেই পাইরেসি রোধে সরকারি পদক্ষেপ জরুরি।
শিল্প সুবিধা নিশ্চিতকরণ
চলচ্চিত্রকে সরকারিভাবে শিল্প ঘোষণা করা হয়েছে প্রায় তিন বছর আগে। কিন্তু শিল্পের সুযোগ-সুবিধা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। শুধু সিনেমা হলের কর মওকুফ করা হলেও প্রায় হল মালিক দর্শক সুবিধা নিশ্চিত বা পরিবেশ তৈরি করেনি। এ জন্য হলের অবস্থা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের জন্য সরকারিভাবে পরিদর্শক নিয়োগ অপরিহার্য। শুধু পরিবেশ তদারকি নয়, টিকিটে এসি চার্জসহ নানা খাতে অর্থ নেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে প্রায় সিনেমা হলে পাখার ব্যবস্থাও নেই। পরিদর্শক নিয়োগ করলে এসব সমস্যার সমাধান নিশ্চিত হবে।
যন্ত্রপাতি আমদানির ক্ষেত্রে কর মওকুফ বা হ্রাস
সিনেমা হল এবং এফডিসির যন্ত্রপাতি আমদানির ক্ষেত্রে সরকারকে কর মওকুফ বা হ্রাস করতে হবে। কমপক্ষে তিন বছরের জন্য এ ব্যবস্থা করতে পারলেই সিনেমা হল এবং এফডিসিতে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপন সম্ভব হবে। এতে চলচ্চিত্র নির্মাণ এবং প্রদর্শনে গতি আসবে।
অনুদানের নতুন নীতিমালা প্রণয়ন
চলচ্চিত্র নির্মাণে প্রদত্ত সরকারি অনুদান প্রথার পরিবর্তন প্রয়োজন। এক্ষেত্রে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন জরুরি। কারণ নামমাত্র যে অর্থ দেওয়া হয় তা দিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ অসম্ভব। এ কারণে বেশির ভাগ অনুদানের চলচ্চিত্র আলোর মুখ দেখে না। বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে অনুদানের পরিমাণ ও সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। এতে এ ধারার চলচ্চিত্রের জাতীয় পুরস্কার লাভ এবং বেশি পরিমাণে মানসম্মত চলচ্চিত্র নির্মাণে উৎসাহিত হবে।
এফডিসিকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা
এফডিসি হচ্ছে চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রধান সূতিকাগার। অথচ বর্তমানে এই সংস্থার মাধ্যমে একটি পূর্ণাঙ্গ চলচ্চিত্র নির্মাণ অসম্ভব। কারণ এখানে জিমি জিপ, অত্যাধুনিক ক্যামেরা, পোস্ট প্রোডাকশনের কাজসহ কোনো সুযোগ-সুবিধাই নেই। ২০১১ সালে সরকার এফডিসির আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণে প্রায় ৫৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে ওই অর্থ এখন পর্যন্ত কাজে লাগানো যায়নি। অথচ এই টাকার সদ্ব্যবহার হলে এফডিসি এতদিনে নিঃসন্দেহে পূর্ণতা পেত। কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল চলচ্চিত্র সংগঠনের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করে এফডিসির উন্নয়নের মাধ্যমে নির্মাতাদের সমস্যা দূরীকরণের ব্যবস্থা করা।
আন্তর্জাতিক বাজারের দ্বার উন্মোচন
এ দেশের চলচ্চিত্র যাতে সহজেই আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করতে পারে সেই সহযোগিতা সরকারকেই করতে হবে। বিশ্বে বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোর সহায়তায় সহজেই আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের চলচ্চিত্র প্রবেশ করতে পারে। এ ক্ষেত্রে দূতাবাসগুলোকে সরকার নির্দেশনা দেবে। এতে একদিকে বিদেশে বাংলাদেশের সংস্কৃতির উপস্থাপন এবং এ খাতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হবে। ইউরোপ, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বে বাংলাদেশের যে বিশাল চলচ্চিত্রের বাজার রয়েছে তা কাজে লাগাতে পারলে আমাদের চলচ্চিত্র দ্রুত বিশ্বমানে উন্নীত হবে।