আপনার ১৮তম একক 'বোকামন' এর খবর কী?
ইচ্ছা আছে রোজার ঈদে যে করেই হোক, অ্যালবামটি প্রকাশ করে দেব। এরই মধ্যে যে পরিমাণের স্টেজ শো আর টিভিতে অনুষ্ঠান পেয়েছি তাতে করে বর্তমানে স্টেজেই বেশি সময় দিতে হবে।
অ্যালবামের নাম 'বোকামন' রেখেছেন কেন?
আমার তো মনে হয় মানুষের মন বোকা। আর সত্যি বলতে, আমার মনটা বোকা। আমি অনেক কনফিউসড থাকি। অনেক কিছুতে একবার আগাই, দুবার পেছাই। আর এই অ্যালবামের গানগুলো আমার জীবনের সঙ্গে মিশে গেছে। চাইলে অনেক ধুম-ধামাক্কা নাম দিতে পারতাম (যেমন জোর কা ঝাটকা)। কিন্তু ওটা তো আমি না, আমার তো বোকামন। আর এ অ্যালবামে আমার মায়ের (খোশনূর বেগম) এর একটি গান (বাঁশরিয়া) থাকছে। এর আগেও তার লেখা অনেক গান করেছি। এখন তো মায়ের সঙ্গে কমই কাজ করা হয়। মোট ১১টি গান নিয়ে সাজানো হয়েছে অ্যালবামটি। এর মধ্যে কলকাতার তিনটি অফ বিটের গান থাকবে। গানগুলোর শিরোনাম 'স্তব্ধতার গান শুনি', 'জানি আবার কখনো' ও 'ফিরে দেখা'। এই গানগুলোর সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছেন বিশ্বরুপ ঘোষ। জে কে ভাইয়ের করা 'বোকা মন', 'দোলা ' ও শওকত আলী ইমনের 'জোরকা ঝাটকা' গানটিও থাকছে। আরও আছে 'শ্যামা পিরিতি' শিরোনামের একটি গান। আবিদ রনির সুরে 'সামনে পেছনে' গানসহ কিশোরের করা দুটি গান রয়েছে।
আপনার প্রথম একক অ্যালবাম করার আগে ১৯৯৩ সালে বাংলা ছবিতে প্রথম প্লেব্যাক করেছেন, তাছাড়া ছবিতে অভিনয় করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন।
আমি আগে শখে গান গাইতাম। তবে 'বিদ্রোহী বধূ' ছবিতে প্রথম প্লেব্যাক করেছিলাম। আর অ্যালবাম প্রকাশের আগে আমার ৫০-৬০টি ফিল্মের গান করা হয়েছে। তখন আমি ভয়েস দিতাম শাবানা, ববিতা, কবরী, চম্পা, দিতি আন্টির। এটা শিল্পী হিসেবে আমার জন্য অনেক বড় একটা পাওয়া। আর আমার প্রথম একক 'প্রথম কলি' প্রকাশিত হয় ১৯৯৭ সালে।
বর্তমানে কি কোনো ছবির প্লেব্যাক করছেন?
চলচ্চিত্রে কাজ করতে হলে একটি লিয়াজোঁ মেনটেন করতে হয়। তারপরও আমি প্রতি মাসে দুই-একটি ছবিতে প্লেব্যাক করছি। সম্প্রতি ইমনের সুরে 'বাঁচার মতো বাঁচতে চাই ' শিরোনামের একটি চলচ্চিত্রে কাজ শেষ করেছি।
আপনি তো 'ভাত দে' ছবিতে শিশুশিল্পী চরিত্রে অভিনয় করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন, এরপর 'এক কাপ চা' ছবিতেও অভিনয় করেছেন। আর অভিনয় করলেন না কেন?
নিজেকে একজন কণ্ঠশিল্পী হিসেবেই ভাবতে ভালো লাগে। কিন্তু চলচ্চিত্রে অভিনয় করার অফার পাই প্রতিনিয়তই। তারপরও মনে হয় এখনই শুরু করলাম। আর বর্তমানে যারা নতুন শিল্পী আছেন তাদের সঙ্গে আমারও নাম নেন শ্রোতারা। এটা আমার খুব ভালো লাগে। শ্রোতারা আমাকে সেই চোখে দেখেন। এটা আসলে আল্লাহর রহমত ও আমার কাজের নিষ্ঠা। আর এভাবেই আমি কাজ করে যেতে চাই। আর আমার মনে হয় কাজ করার জন্য এটাই আমার উপযুক্ত সময়। আমি আমার নিজের কাজ বেছে এখন করতে পারি।
নতুন শিল্পীদের নিয়ে আপনার মন্তব্য কী?
এই সময়ে অনেক শিল্পীই তো হঠাৎ স্টার হয়েছেন। অল্প সময়ে দেখে ফেলেন প্রচুর অর্থ আর সম্মান। দেখা গেছে, কোনো প্রতিযোগিতা থেকে বেরিয়ে তারা এত পরিমাণের স্টেজ শো করেন তাতে করে গানের চর্চাটাও ভুলে যান। এতে গানের কলাটা নষ্ট হয়ে যায় এবং অল্প দিনের মধ্যেই সংগীত জগৎ থেকে বিদায় নিতে হয়। কিন্তু তাদের মধ্যে অনেক নতুন শিল্পী ভালো করছেন।
এর কারণ কী বলে আপনি মনে করেন?
গান হচ্ছে কান ও মনের জিনিস। তাই গান মনেও ধরতে হবে। এখনকার কয়টি গান শ্রোতাদের মনে ধরছে? কান পর্যন্ত হয়তো পৌঁছাচ্ছে কিন্তু মনে ধরছে না। কারণ মেশিন দিয়ে কোনোরকম কাজ করে গান করলে তা বুকের মধ্যে পেঁৗছাবে না।
আপনার গান শেখা নিয়ে যদি বলতেন?
আমি প্রয়াত ওস্তাদ আকতার সাদমানির কাছে ক্লাসিক্যাল গান শিখেছি আট বছর। আর সঞ্জীব দের কাছেও তিন বছর শিখেছি।
আলী আফতাব