স্থানীয় ক্যাবলে ছায়াছবি প্রদর্শন করা যাবে না এবং সার্ভারের মাধ্যমে প্রেক্ষাগৃহে ছবি প্রদর্শন করতে হবে। তা ছাড়া সেন্সরে ছবি জমা দেওয়ার আগেই কপিরাইটের রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদন করতে হবে। চলচ্চিত্রকারদের দাবির প্রেক্ষিতে এসব বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার। পাইরেসি রোধকল্পে বৃহস্পতিবার তথ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সহ-সভাপতি সুদীপ্ত কুমার দাশ বলেন, তথ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে সমিতির পক্ষ থেকে চলচ্চিত্রের উন্নয়নে সরকারের কাছে তিনটি প্রস্তাব দেওয়া হয়। এগুলো হচ্ছে- পাইরেসি রোধকল্পে সেন্ট্রাল সার্ভার সিস্টেমে প্রেক্ষাগৃহে ছবি প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা। বিশ্বের সব জায়গায় এই ব্যবস্থা চালু আছে। এই ব্যবস্থা চালু হলে পাইরেসি করা আর সম্ভব হবে না। দ্বিতীয়ত, স্থানীয় ক্যাবলে যে কোনো দেশের ছায়াছবি প্রদর্শন করতে হবে। কারণ মুক্তির সঙ্গে সঙ্গে পাইরেটেড ছবি চ্যানেলগুলো প্রদর্শন করে। এ ব্যাপারে প্রদর্শক সমিতির সঙ্গে ক্যাবেল মালিকদের চুক্তি থাকলেও এই চুক্তি ভঙ্গ করা হয়েছে। এতে দর্শক ঘরে বসে ছবি দেখতে পারছে বলে আর প্রেক্ষাগৃহে যাচ্ছে না। ফলে চলচ্চিত্রশিল্প ও প্রেক্ষাগৃহ উভয়ে লোকসানের কবলে পড়েছে। তৃতীয় কপিরাইট ছবির ক্ষেত্রে ছবিটি সেন্সরে জমা দেওয়ার আগেই রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদন করতে হবে ও ছবি জমা দেওয়ার সময় আবেদনের কপিটি সেন্সর বোর্ডে জমা দিতে হবে এবং সেন্সর সার্টিফিকেট পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন নিয়ে নিতে হবে।
বৈঠকে মন্ত্রী বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করেন এবং বলেন ক্যাবলে কোনোভাবেই ছবি প্রদর্শন করা যাবে না। যদি করা হয় তা হলে সেই ছবির সিডি জব্দ, চ্যানেল বন্ধ এবং লাইসেন্স সাসপেন্ড করা হবে।
এ ছাড়া পাইরেসির হোতাদের ধরতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ বিষয়ে আইন ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বলা হয়। পাইরেসি হোতা বা কারও কাছে পাইরেটেড সিডি পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিকভাবে সর্বোচ্চ দুই বছরের জেল দেওয়া হবে।
এ ছাড়া প্রেক্ষাগৃহ সংস্কারের ব্যাপারেও আলোচনা হয় এবং এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও জানান মন্ত্রী।
বৈঠকে তথ্য, আইন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, পুলিশ এবং র্যাব কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। চলচ্চিত্র শিল্প থেকে বৈঠকে অংশ নেন প্রদর্শক সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলাম, সহসভাপতি সুদীপ্ত কুমার দাশ, প্রযোজক সমিতির সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি খোরশেদ আলম খসরু, পরিচালক সমিতির সহসভাপতি সোহানুর রহমান সোহান এবং মহাসচিব মুশফিকুর রহমান গুলজার।