না ফেরার দেশে চলে গেলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় অভিনেতা গঙ্গোপাধ্যায়। শনিবার দিবাগত রাত পৌনে তিনটায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জে জন্ম নেওয়া এই গুণী অভিনেতার। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫০ বছর। মূলত মাল্টি অর্গান ফেলিওর-এর কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
এর আগে, গত মঙ্গলবার সপ্তমীর সন্ধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলার সাঁতরাগাছি সেতুর ওপর সড়ক দুর্ঘনটায় গুরুতর আহত হন এই অভিনেতা। একই সঙ্গে আহত হন নৃত্যশিল্পী মালবিকা সেন। শরীরের ডানদিকের অংশে মাল্টিপল ফ্র্যাকচার হয় পীযূষের। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে প্রথমে তাদের হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখানে থেকে তাঁদের স্থানান্তরিত করা হয় কলকাতা বেলভিউ নার্সিং হোমে। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ওই দিন রাতেই তাঁকে হাসপাতালে দেখতে যান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।
গত শুক্রবার দুপুর থেকেই তাঁর অবস্থার অবনতি হতে থাকে। হাসপাতালের তরফে জানানো হয় পীযূষের অবস্থার অত্যন্ত সঙ্কটজনক। শনিবার তাঁর মুখ ও হাতে অস্ত্রোপচারের কথা থাকলেও তা বাতিল করা হয়। তাঁকে রাখা হয়েছিল ভেন্টিলেশনে। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।
প্রসঙ্গত, ১৯৬৫ সালে ২ জানুয়ারি ঢাকার নারায়ণগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন পীযূষ, পরে কলকাতা আসেন। ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক অর এগ্রিকালচার এন্ড রুরাল ডেভলপমেন্ট (নাবার্ড)-এ তাঁর কর্মজীবন শুরু হলেও পরের দিকে অভিনয় জগতে নাম লেখান তিনি। প্রথম দিকে থিয়েটার ও ছোট পর্যায়ে দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেছেন তিনি। তাঁর অভিনীত নাটকের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল জেষ্ঠ পুত্র, আক্ষরিক, জোছনা, ১৭ জুলাই, ব্রেইন, সিনেমার মতো, গ্যালিলিও গ্যালিলি। ছোট পর্দায় ‘আবার জখের ধন’ সিরিয়াল দিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন। এরপর জন্মভূমি, সোনার হরিণ, জল নূপুর, চোখের হারা তুই, আঁচলসহ একাধিক সিরিয়ালে অভিনয় করছিলেন তিনি।
গত ২০ বছর ধরে বাংলা টিভি সিরিয়ালে জনপ্রিয় মুখ ছিল পীযূষ। বড় পর্দাতেও কাজ করেছেন তিনি। ‘মোহুলবনির সেরেং’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ট পুরস্কার হিসেবে ২০০৫ সালে বেঙ্গল ফিল্ম র্জানালিস্ট অ্যাসোশিয়েশন (বিএফজেএ)-এর পুরস্কার পান তিনি। ২০১৪ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রালয়ের তরফে টেলি অ্যাকাডেমি পুরস্কার পান তিনি। এছাড়াও পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার।
তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে শিল্পী মহলে। শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।
বিডি-প্রতিদিন/২৫ অক্টোবর, ২০১৫/মাহবুব