''প্রিয় বন্ধুরা আমার, জীবন আসলেই সুন্দর, এত সুন্দর বসন্ত কোথায় পাবেন বলুন, এত ঝুম বৃষ্টি। এই যে, যখন বাড়ি ফিরে যাবেন, পরির মতো মেয়ে ঝাঁপ দিয়ে কোলে পড়বে, দুষ্টু ছেলেটি ডিসুম ডিসুম করে সুপারম্যান সাজবে, আর বারান্দায় একা দেখবেন অপেক্ষা করছে ঘরের মানুষটি, জায়নামাজে মা কিংবা বাবা, এমন চমৎকার অলৌকিক দৃশ্য শুধু মানব জীবনেই পাওয়া যায়, আর কিছুতে নয়। এমন অসাধারণ সৌভাগ্যের মালিক হওয়ার পরও নিরাশ হওয়ার কিছু নেই। এরপরও অতৃপ্ত থাকার কোনো কারণ নেই।''
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে আয়োজিত ‘আই হ্যাভ এ ড্রিম’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এভাবে কথার বুলিতে দর্শকদের মাতিয়ে গেলেন মিস আয়ারল্যান্ড এবং মিস আর্থ ইন্টারন্যাশনালের প্রথম রানার আপ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিশ্বজয়ী সুন্দরী মাকসুদা আকতার প্রিয়তি। রোটারি ক্লাব অব চিটাগাং খুলশী, রোটারি ক্লাব অব চিটাগাং ও রোটারি ক্লাব অব চিটাগাং লিপটন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এতে জীবনের গল্প তুলে ধরে প্রিয়তি বলেন, আমি কিন্তু সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মায়নি। আমার জন্মও সাধারণ বাঙালি পরিবারে। আপনাদের মতোই আনন্দ-বেদনাময় সরল সোজা পরিবার। কিন্তু একটু ব্যতিক্রম ছিল, তা হচ্ছে ওই যে আমারও একদিন মনে হযেছিল, জীবন অনেক সুন্দর। একে হেলাফেলায় নষ্ট করা যাবে না। ছুটতে হবে, সামনের দিকে, আকাশের দিকে। তাই আমি স্বপ্ন দেখেছি। কিন্তু এ স্বপ্ন দেখা সহজ ছিল না। স্বপ্নের পরাজয় নেই, স্বপ্ন অমর। আর মানুষ অবশ্যই স্বপ্নের চেয়ে বড়।’
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মা ও শিশু হাসপাতালের প্রেসিডেন্ট ডা. এএসএম ফজলুল করিম, দৈনিক আজাদীর পরিচালনা সম্পাদক ওয়াহিদ মালেক, কথাসাহিত্যিক বাদল সৈয়দ, অতিরিক্ত কর কমিশনার বজলুল কবির ভূঁইয়া, রোটারিয়ান আবদুল আহাদ, খালেদ মাহমুদ সুজন প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য দেন রোটারি ক্লাব অব চিটাগাংয়ের সভাপতি আশিক ইমরান।
হল ভর্তি দর্শকদের প্রিয়তি আরও বলেন, আমার স্বপ্ন বলেছিল, ওই মুকুট আমার। সে স্বপ্ন কিন্তু ঘুমিয়ে দেখা স্বপ্ন নয়। আমি তা দেখেছিলাম জেগে। আর তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল আমার চেষ্টা ও শ্রম, আমার লেগে থাকা। আপনাদেরও বলি, জেগে স্বপ্ন দেখুন, তারপর কামড় দিয়ে পড়ে থাকুন। স্বপ্ন আপনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করবে না।’
মিস আয়ারল্যান্ড প্রতিযোগিতার প্রথম দিকের স্মৃতিচারণ করে প্রিয়তি বলেন, আমি যখন প্রথম মিস আয়ারল্যান্ড প্রতিযোগিতায় যাই, তখন আমার আজকের স্বাচ্ছন্দ্য ছিল না, স্পন্সর ছিল না। আমাকে আমার নিজের টাকা জোগাড় করতে হয়েছে। এমনকি আমি সাধারণ মানুষের কাছে গেছি। বলেছি আমাকে সাহায্য করুন। আমি মিস আয়ারল্যান্ড প্রতিযোগিতায় যাচ্ছি। তারা করেছেন এবং আমি মিস আয়ারল্যান্ড মুকুট মাথায় পরেছি। কারণ আমি জানতাম ওই মুকুট আমার। ওটা আর কারও হতে পারে না।
প্রিয়তি আরও বলেন, আমার এ তৃপ্তি থেকেই ভাবুন, দুনিয়া আপনার পায়ের তলায়, আপনি যে রকম ইচ্ছে সে রকম করে এ জীবন সাজাবেন। দেখবেন জীবন সাজবেই।
বিডি-প্রতিদিন/১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/মাহবুব