জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, জাতির প্রত্যাশা অনুযায়ী তিনটি ‘ম্যান্ডেটরি’ (বাধ্যতামূলক) দাবি পূরণ হলেই ডিসেম্বর থেকে জুন অথবা তার আগেও নির্বাচন হতে পারে। গতকাল রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। দলের আমিরের ইউরোপ ও যুক্তরাজ্য সফর শেষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জামায়াতে ইসলামী। এতে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বিদেশিরা আমাদের দেশের নির্বাচন নিয়ে জানতে চেয়েছেন যে এ নির্বাচন কখন হবে, কীভাবে হবে? আমরা বলেছি, অনেক ত্যাগ এবং চেষ্টার বিনিময়ে যে পরিবেশ এসেছে- সেই পরিবেশ তিনটি ম্যান্ডেটরি জিনিস দাবি করছে। প্রথম হলো- দৃশ্যমান, গ্রহণযোগ্য, মৌলিক সংস্কার। আমরা বলেছি, সংস্কার না করে যেই নির্বাচন হবে, সেই নির্বাচন গণতন্ত্রের কোনো ভিত্তি রচনা করতে পারবে না। বরং অতীতের যেসব নির্বাচন দেশ ও জাতির কাছে মোটেই গ্রহণযোগ্য হয়নি, সেরকম হয়তো আরেকটা খারাপ নির্বাচন হবে। আমরা ওই নির্বাচন চাই না। এ সংস্কার কারা করবে? প্রশ্নের জবাবে জামায়াত আমির বলেন, সংস্কারের প্রধান অংশীজন হলো রাজনৈতিক দলগুলো। দলগুলো যত তাড়াতাড়ি ও আন্তরিকতার সঙ্গে সংস্কারে সহযোগিতা করবে, তত তাড়াতাড়ি নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হবে। তিনি আরও বলেন, দ্বিতীয় দাবি হলো, জুলাই আন্দোলনে যারা নিহত ও আহত হয়েছেন, এই খুনের দায় যাদের- তাদের বিচারের আওতায় এনে দৃশ্যমান বিচার এই জাতিকে দেখাতে হবে। যাতে খুনিদের বিচারের বিষয়ে জাতির আস্থা ফিরে আসে। তৃতীয় দাবি হচ্ছে- রাজনৈতিক দলগুলোকে পরস্পরকে সম্মান করার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। জিতে গেলে নির্বাচন সুষ্ঠু, আর হেরে গেলে ভোটে কারচুপি- এই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তবে সেই নির্বাচনটা এমন হতে হবে, যে নির্বাচন নিয়ে কেউ সহজে প্রশ্ন তুলতে না পারে। এজন্য অনেক ডায়ালগ ও এনগেজমেন্টের (আলাপ-আলোচনা-সম্পৃক্ততা) প্রয়োজন। এটি সরকারের তরফ থেকে হতে পারে, রাজনৈতিক দলগুলোর নিজস্ব উদ্যোগে হতে পারে, সুশীল সমাজের পক্ষ থেকেও হতে পারে। এটা যখন মাল্টিপল (বহুপক্ষীয়) জায়গা থেকে হবে, তখন একটা পরিবেশ তৈরি হবে। জামায়াতের আমির বলেন, প্রধান উপদেষ্টা জাতির সামনে বারবার বলেছেন, ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তারা মনে করেন, আনুষঙ্গিক প্রস্তুতির জন্য, সংস্কারের জন্য, বিচারের জন্য এ সময়টা গ্রহণযোগ্য। এ সময়ের সীমা যাতে অতিক্রম করে না যায়, তারা সেই বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মজিবুর রহমান, মাওলানা আ ন ম শামসুল আলম, সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা আবদুল হালিম, এ টি এম মাসুম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, মহানগর উত্তরের আমির সেলিম উদ্দিন প্রমুখ।