ফলের রাজা যদি হয় আম তবে সবজির রাজা অবশ্যই বলা উচিত টমেটোকে। টমেটো যেমন হার্টের সমস্যা দূরে রাখতে পারে তেমনই ডায়াবেটিস, কিডনির সমস্যা রুখতেও অনস্বীকার্য। টমেটোয় থাকা লাইকোপেন প্রোস্টেট, কলোরেকটাল বা পেটের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেক কমিয়ে দেয়। প্রাকৃতিক এ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রুখতে পারে। কাঁচা টমেটো থেকেও বেশি উপকারী রান্না টমেটো। তাই যত পারুন টমেটোর সুপ খান, রান্নায়ও ব্যবহার করুন টমেটো।
টমেটোর মধ্যে থাকা ভিটামিন ‘বি’ ও পটাশিয়াম রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। প্রতিদিনের ডায়েটে টমেটো থাকলে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক ও হার্টের অন্য সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। কিডনি ভালো রাখতে টমেটো খেতে পারেন। টমেটোর মধ্যে থাকা ক্রোমিয়াম ও অন্যান্য মিনারেল রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। টমেটোয় পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ‘কে’ থাকে। হাড়ের টিস্যু ঠিক রাখতে ও ছোটখাটো সমস্যা দূর করতে টমেটো অপরিহার্য।
বর্তমানে দূষণ ও বদ অভ্যাসের কারণে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে আমাদের ত্বক এবং চুলে। ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্যকে উন্নত করে সহায়ক টমেটো। টমেটোর মধ্যে লাইকোপেন ও ভিটামিন সি রয়েছে যা ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মির হাত থেকে রক্ষা করে। একই সাথে, টমেটোয় ভিটামিন এ রয়েছে যা চুলের বাহ্যিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে। তাই ত্বককে সুন্দর রাখতে মাস্ক এবং ক্লিনজার হিসাবে টমেটো ব্যবহার করতে পারেন।
গবেষণায় দেখা গেছে টমেটোর মধ্যে ১১০ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম রয়েছে। এছাড়াও ভিটামিন কে-তে সমৃদ্ধ হয় টমেটো। টমেটোর এই ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন কে উপাদান হাড়কে মজবুত করতে সাহায্য করে। অর্থাৎ আপনি যত বেশি টমেটো খাবেন আপনার হাড় ততই শক্তিশালী হবে।
ধূমপান করার ফলে আমাদের শরীরে একাধিক নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, যা ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার পরও থেকে যায়। কিন্তু আপনি যদি টমেটোকে খাদ্য তালিকায় রাখেন তাহলে টমেটোয় থাকা অ্যাসিড সেই প্রভাব থেকে আপনার শরীরকে রক্ষা করবে এবং আপনাকে সুস্থ রাখবে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হয় টমেটো। টমেটোর মধ্যে থাকা ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি রক্তে থাকা মুক্ত রাডিক্যালের সাথে লড়াই করে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ভিটামিন এ, ভিটামিন বি এবং পটাসিয়াম আপনার কোলেস্টেরলের মাত্রা এবং রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে। যার ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেক কমে যায়। এমনকি টমেটোর মধ্যে থাকা অন্যান্য খনিজ উপাদানও রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। সুতরাং ডায়বেটিস রোগীদের জন্যও কার্যকরী টমেটো।
যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য এবং অন্যান্য পেটের সমস্যা রয়েছে তারাও টমেটোকে খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন। শরীরে ফ্যাট বা চর্বি কমাতে চাইলেও এই পন্থা অবলম্বন করতে পারেন। সামগ্রিক ভাবে, টমেটোয় একাধিক ভিটামিন সহ ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং অনাক্রমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। তাই দেরি না করে এখনই টমেটোকে আপনার খাদ্য তালিকায় যুক্ত করুন।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ আল সিফাত