সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হচ্ছিল। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে ডিউটি করছিলেন এক পুলিশকর্মী। আচমকা বিক্ষোভকারীরা উত্তেজিত হয়ে তাণ্ডব শুরু করে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িতে আগুন জ্বালানোর পাশাপাশি পুলিশ কর্মীদের লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে শুরু করে। অবস্থা সামাল দিতে গিয়ে ভিড়ের মধ্যে আটকে পড়েন ওই পুলিশকর্মী। আর তাকে রাস্তায় ফেলে গণপিটুনি শুরু বিক্ষোভকারীরা। এমন সময় দেবদূতের মতো ঘটনাস্থলে হাজির হন এক মুসলিম বৃদ্ধ। তারপর উত্তেজিত জনতাকে থামিয়ে ওই পুলিশকে গণপিটুনির হাত থেকে বাঁচিয়ে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান। মানবিক এ ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের ফিরোজাবাদে।
আক্রান্ত ওই পুলিশকর্মী অজয় কুমার বলেন, ‘বিক্ষোভকারীদের শান্ত করার চেষ্টা করছিলাম। আচমকা তারা আমাকে রাস্তায় ফেলে গণপিটুনি শুরু করে। আমি সাহায্যের জন্য চিৎকার করলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। জীবনের আশা যখন ছেড়ে দিয়েছে তখন ভগবানের মতো এসে হাজির হন হাজি কাদির। তারপর আমাকে উদ্ধার করে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান, আমার যত্ন করেন। আমার জামাকাপড় ছিড়ে গিয়েছিল বলে নতুন জামাকাপড়ও দেন। পরে স্থানীয় পুলিশ স্টেশনে পৌঁছে দিয়ে আসেন। আমার মাথা ও আঙুলে গুরুতর আঘাত লাগলেও ওনার জন্য প্রাণে বেঁচে গেছি। এইরকম মানুষ কমই পাওয়া যায়।’
যদিও ওই পুলিশকর্মীর প্রাণ বাঁচানোর ঘটনাকে নিজের কর্তব্য বলেই উল্লেখ করেছেন হাজি কাদির। তার কথায়, ‘আমি নামাজ পড়ছিলাম। আচমকা শুনতে পাই বাইরে বিক্ষোভকারীরা পুলিশকর্মীকে গণপিটুনি দিচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে তাকে রক্ষা করি। ওই পুলিশকর্মীকে আমি চিনতাম না। যা করেছি মানবিকতার খাতিরেই করেছি। এটা এমন কী বড় কাজ?’ সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে গিয়ে যেখানে প্রায় ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। উত্তরপ্রদেশে এই ঘটনা সেখানে এক নতুন নজির তৈরি করেছে বলেও অনেকের অভিমত। সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক