গত বছর লোকসভা নির্বাচনে দেশজুড়ে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে মোদি, অমিত শাহর বিজেপি। এবার তাদের লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গ। আগামী ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই রাজ্যে আরও সাফল্য পেতে চায় কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দলটি। এই লক্ষ্যে ভালো করে বাংলা ভাষা শিখতে চাচ্ছেন দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। যাতে ভোটের রণকৌশল ঠিক করতে ভাষা কোন প্রকার বাধা না হয়ে দাঁড়ায়। তাছাড়া আরো বেশি করে রাজ্যটির মানুষের কাছে পৌঁছাতে নির্বাচনী প্রচারণার শুরুতে বাংলায় বক্তব্য রাখতে চান অমিত শাহ। এজন্য বাংলা ভাষার একজন শিক্ষককেও নিয়োগ দিয়েছেন তিনি।
কারণ, গত নির্বাচনে সেদিক থেকে অনেক এগিয়ে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তার স্লোগান ছিল মা-মাটি-মানুষ। প্রতিটি সভা থেকে বাংলা ভাষা কথা বলার জন্য নিজেকে গর্ববোধ করতেন মমতা। পাশাপাশি অমিত শাহকে বহিরাগত বলে আখ্যা দিয়ে মমতাকে নতুন বলতে শোনা গিয়েছিল বিজেপির নেতারা বাংলা ভাষা সংস্কৃতি বোঝেন না।
নির্বাচনী রণকৌশল ঠিক করতে অমিত শাহের জুড়ি মেলা ভার এবং বিভিন্ন নির্বাচনে আলাদা আলাদা রণনীতি তৈরি করে থাকেন তিনি। কিন্তু সাম্প্রতিককালে মহারাষ্ট্র হরিয়ানা এবং ঝাড়খন্ড বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির বিপর্যয়ের পর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে কর্তৃত্ব কায়েম করতে চান শাহ। সেই কারণেই দলের কর্মী-সমর্থকদের আরো বুঝতে তাদের কাছে পৌঁছতে বাংলা ভাষা শেখার উপর জোর দিয়েছেন তিনি। রাজ্যের এক সিনিয়র বিজেপি নেতার অভিমত 'এতে নতুনত্ব কিছু নেই। বাংলা, তামিলসহ চারটি আঞ্চলিক ভাষা শিখছেন আমাদের বিজেপি সভাপতি।'
একজন গুজরাটি হয়েও হিন্দিতে ভালো দখল রয়েছে বিজেপির সভাপতির। কারাগারে থাকাকালীন সময়ে তিনি হিন্দি শিখেছিলেন বলে জানা যায়। সেসময় দু'বছর গুজরাটে ঢোকাও নিষিদ্ধ ছিল অমিত শাহের। শাস্ত্রীয় সংগীতের উপরেও ভালো দখল রয়েছে বিজেপির 'সেকেন্ড ইন কমান্ড' অমিত শাহের, সময় পেলে নিয়মিত রেওয়াজও করেন তিনি।
গত মাসে ভারতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জি নিয়ে গোটা দেশের সাথে বিক্ষোভ, প্রতিবাদ সংগঠিত হয়। তৃণমূলসহ বিরোধীদলগুলো একের পর এক প্রতিবাদী মিছিলে অংশ নেয়। কিন্তু সেই অর্থে কেন্দ্রের শাসকদের বিজেপিকে রাস্তায় নামতে দেখা যায়নি তাই এই আইনের সঠিক কারণ মানুষের কাছে তুলে ধরতে বৃহৎ আকারে রাস্তায় নামছে বিজেপি। একটা বিশাল সংখ্যক হিন্দু শরণার্থীর বাস রয়েছে এই রাজ্যটিতে। তাই সেই সব শরণার্থীসহ আগামী একমাসে রাজ্যের এক কোটি মানুষের কাছে পৌঁছতে এবার রাজ্যজুড়ে 'সিএএ'-এর সমর্থনে মিছিল, মিটিং করবেন তারা। একই সঙ্গে মানুষকে এই আইনের প্রয়োজনীয়তা বোঝাবেন বিজেপি নেতারা।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত/মাহবুব