নতুন প্রকল্প তৈরির অংশ হিসেবে পরিত্যক্ত কার্গো বিমানটি যখন ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়, তখন সংযুক্ত আরব আমিরাতের অনেক বাসিন্দাই হতাশ হয়েছিলেন। কারণ, সোভিয়েত আমলের ইলিউশন আইএল-৭৬ মডেলের বিমানটি দুই দশকের বেশি সময় ধরে উম্ম আল কোয়াইনের বারাকুডা সমুদ্র রিসোর্টে পড়ে ছিল।
তবে লাল নাক বিশিষ্ট রহস্যময় বিমানটির ভক্তরা এখন ইচ্ছা করলে নিজের কাছে বিমানটির স্মৃতি রাখতে পারবেন। স্থানীয় একটি কোম্পানি বিমানটির ত্বক থেকে ট্যাগ তৈরি করেছে (সংস্করণ সীমাবদ্ধ)। এই ট্যাগ চাবির চেইন কিংবা অন্যান্য বহনকারী আইটেমে (কালেক্টর আইটেম) ব্যবহার করা যাবে। উইং ক্রাফটের প্রতিষ্ঠাতা ফায়াজ মোহাম্মদ আলী এই তথ্য জানিয়েছেন। তার আজমান ভিত্তিক কোম্পানিটি বিমান সংশ্লিষ্ট সামগ্রী থেকে বিগত ৪ বছর যাবত ফার্নিচার এবং অন্যান্য শিল্প সজ্জা তৈরি করছে।
বিভিন্ন বিমানের অংশ নিয়ে শিল্পসামগ্রী তৈরি করলেও আলীর কাছে সোভিয়েত আমলের বিমান আইএল-৭৬ নিয়ে কাজ করা বিশেষ কিছু। তিনি বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে জন্ম এবং বেড়ে ওঠার কারণে আইএল-৭৬ আমার কাছে একটি বিশেষ কিছু। যখনই আমি উম্ম আল কোয়াইনে যেতাম, তখন ঐশ্বর্যশালী বিমানটি দেখে আপ্লুত হতাম।
ভারতীয় এই প্রবাসী বলেন, খালিজ টাইমসে যখন তিনি বিমানটি ভাঙার খবর দেখেন, তাৎক্ষণিক তিনি উম্ম আল কোয়াইনে শেষ বারের মতো বিমানটি দেখতে ছুটে যান।
আলী জানান, নিরাপত্তা ভেদ করে তিনি বিমানটির কাছাকাছি চলে যান। যদিও এটা তার জন্য মোটেও সহজ ছিল না। কাছে গিয়ে তিনি দেখতে পান, শ্রমিকরা বিমানটি নাট-বল্টু খুলে ফেলছে। এটা গলিয়ে ফেলা হবে ভেবে তার হৃদয় ভেঙে যাচ্ছিল। তবে একই সময় তার মাথায় এমন কিছু করার চিন্তা আসে, যার মাধ্যমে মানুষের মাঝে বিমানটির স্মৃতি বেঁচে থাকবে।
বিমানের অংশ থেকে তৈরি খোদাইকৃত ট্যাগ হাতে ফায়াজ মোহাম্মদ আলী। ছবি খালিজ টাইমস
ফায়াজ মোহাম্মদ আলী বিমানটির ক্রেতাকে (স্ক্রাপ ডিলার) পেয়ে যান। তার কাছ থেকে বিমানটি কিছু অংশ (ত্বক) নিয়ে ৩৫শ পকেট সাইজ প্লেন ট্যাগ নির্মাণ করেছেন। এই ট্যাগে (সাড়ে ৪ সেন্টিমিটার প্রস্থ, ৫ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট) বিমানটির তৈরি সাল, মডেলসহ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রাখা হয়েছে। নতুন বছরের শুরুতে ৯৯ দিরহামে খুচরা ট্যাগ (সিঙ্গেল ট্যাগ) কেনা যাবে। আলী বলেন, এর মাধ্যমে বিমানটির উড্ডয়নের স্মৃতি মানুষ বিশেষ করে বিমানটির ভক্তরা নিজেদের কাছে সংরক্ষণ করতে পারবেন।
খালিজ টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর রুশ বিমানটি আমিরাতে উড়িয়ে আনা হয়। আমিরাতের এয়ার কোম্পানি চেজের কাছে এটি রাশিয়ানরা বিক্রি করে দেয়। ৯০ দশকের মাঝামাঝি সময়ে বিমানটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। সূত্র: খালিজ টাইমস
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল