নববর্ষের আগে অন্ধকারে নিমজ্জিত ইউক্রেন। রুশ বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় দেশটির অধিকাংশ বিদ্যুৎকেন্দ্র বিকল হয়ে গেছে। এতে রাজধানী কিয়েভ-সহ দেশটির অধিকাংশ এলাকা ‘ব্ল্যাক আউট’-এর কবলে পড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
শুক্রবার, যুদ্ধের ৩১০তম দিনে রাজধানী কিয়েভ-সহ ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে চলছে রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের ধারাবাহিক হামলা। ইউক্রেন সেনার একটি সূত্র জানিয়েছে, বুধবার রাত থেকে কয়েক’শ ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে রুশ বাহিনী। প্রবল শীত আর তুষারপাতের মধ্যে ঝাঁকে ঝাঁকে রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের হামলায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে কিয়েভ-সহ বিভিন্ন শহরের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, বহু বিদ্যুৎকেন্দ্র ধ্বংস হওয়ায় দেশের অধিকাংশ এলাকাতেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে তিনি বলেন, “রাজধানী কিয়েভ ও এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের ছাড়াও লভিভ, ওডেসা, খেরসন, ভিনিটসিয়া এবং ট্রান্সকারপাথিয়া এলাকায় জীবন কঠিন হয়ে পড়েছে। তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচে নেমে গেছে। বিচ্ছিন্ন রয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ।”
রাজধানী কিয়েভের পাশাপাশি ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের শহর জাপোরিঝঝিয়া এবং দক্ষিণের খেরসন অঞ্চলে রুশ বাহিনী ধারাবাহিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে বলে পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমের দাবি। ইউক্রেনের দাবি, এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির পক্ষ থেকে যুদ্ধ থামানোর জন্য যে ১০ দফার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ তা নাকচ করেছেন।
প্রসঙ্গত, জেলেনস্কি কয়েক মাস আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, শীতের মৌসুমে নতুন করে বিধ্বংসী হামলা চালাতে পারে রাশিয়া। দেশবাসীর উদ্দেশে এক বক্তৃতায় তিনি বলেছিলেন, “বিদ্যুতের সরবরাহ কম থাকায় আমাদের সকলকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।”
পাশাপাশি, রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় গৃহহীন ইউক্রেনীয় নাগরিকদের জন্য আশ্রয় শিবির খোলার কথাও জানিয়েছিলেন তিনি।
এরপর চলতি মাসে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, শীতের মধ্যেই কিয়েভ দখলের লক্ষ্যে নতুন প্রস্তুতি শুরু করেছে প্রায় ২ লাখ রুশ সেনাবাহিনী। সেই বাহিনীতে রয়েছে বাছাই করা বেশ কিছু গোলন্দাজ, ট্যাংক ও সাঁজোয়া ব্যাটালিয়ন। ইউক্রেন সেনার জেনারেল ভ্যালেরি জালুঝনি একটি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে এই ‘তথ্য’ দেন। কিন্তু এখনও রুশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সেই ‘ফাইনাল অ্যাসল্ট’ শুরু হয়নি। বরং সরাসরি সামরিক অভিযানে ইউক্রেনকে ধরাশায়ী করতে না পেরে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যে কৌশল নিয়েছেন, তাতে প্রবল ঠাণ্ডার মধ্যে জীবনসঙ্কটে জেলেনস্কির দেশের অন্তত ১ কোটি মানুষ। সূত্র: ফ্রান্স২৪, জাপান টাইমস, বিবিসি
বিডি প্রতিদিন/কালাম