কারসন হার্টলে। বয়স চার বছর। কিন্তু এরই মধ্যে তার শরীরে ৪০ বার অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে। চিকিৎসকরা জবাব দিয়েছেন। এ রোগ সারার নয়। তাই সন্তানকে তার শেষ কয়েকটি দিনে পৃথিবীর সব আনন্দ দিতে বদ্ধপরিকর বাবা ডেমিয়েন এবং মা ক্রিস্টি।
ল্যাঙ্কাশায়ারের এই যুগল তাই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যাতে বাবা-মাকে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে দেখতে পারে তাদের আদরের কারসন।
কিন্তু কী এমন রোগ যা আধুনিক পাশ্চাত্য চিকিৎসাতে সারবে না? ডাক্তারি ভাষায় এই রোগের নাম 'মাইটোকন্ড্রিয়াল'। যাতে শরীরের সমস্ত কোষ ভেঙে নষ্ট হয়ে যায় কিন্তু পুনরায় তৈরি হতে দেয় না।
জন্মের পরই 'ব্লু বেবি সিনড্রোম' এবং হৃদরোগে আক্রান্ত হয় কারসন। এরপরও বহুবার হার্টঅ্যাটাক হয়েছে তার। চিকিৎসা চলাকলীন এত বার তার গলায় টিউব লাগাতে হয়েছে, যে সে বাক শক্তিও হারিয়ে ফেলেছে।
কারসনের চার বছরের ছোট্ট জীবনের সাড়ে তিন বছরই কেটেছে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে। ২০১০ সালে জন্মের পর সে প্রথম বাড়িতে পা রাখে ২০১৩ এর ফেব্রুয়ারিতে।
কারসনের সব অপূর্ণ সাধ মেটাতে সব কিছু ছেড়ে ডেমিয়েন ও ক্রিস্টি সারাদিন শুধু তার দেখভাল করতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। মা ক্রিস্টি জানিয়েছেন, 'ও এখন স্কুলে যেতে শুরু করেছে। ইশারায় কথা বলতেও শিখেছে। আমরা যত দিন পারি ওর বাকি জীবনটা সুন্দর করে সাজানোর চেষ্টা করব। বাকি বাচ্চাদের ক্ষেত্রে যেটা খুব সহজ ও স্বাভাবিক, এর ক্ষেত্রে তা নয়। ও কখনও সমুদ্র দেখেনি। কোনও মজাদার পার্কে যায়নি। এখন ওকে নিয়ে আমরা সে সব জায়গায় যাচ্ছি।'
কারসনের ডাকে সারা দিয়ে তার সঙ্গে এসে দেখা করেছেন ইংল্যান্ডের যুবরানি কেট। বাকি চার ভাইবোনও তার শেষ সময়কে সুন্দর করতে বাবা-মায়ের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়েছে।
ক্রিস্টি আরও জানিয়েছেন, অ্যাডেলের গাওয়া 'মেক ইউ ফিল মাই লাভ' গানটি কারসনের খুব প্রিয়। প্রায় সারাদিনই তার ভাইবোনরা এই গানটি চালিয়ে রাখে। কারসনও সঙ্গে সঙ্গে গান করে।'
যতক্ষণ শ্বাস, ততক্ষণ আশ। তাই পুরোপুরি হাল ছাড়েননি ডেমিয়েন ও ক্রিস্টি। কারসনের চিকিৎসার জন্য একটি ফান্ডরেইসিং করছেন। যাতে ব্যয়বহুল চিকিৎসার খানিকটা জোগাড় করা যায়।