পারিবারিকভাবে বিয়ে হলে জীবনসঙ্গী মানুষটিকে বুঝে উঠতে সময় লাগে একটু বেশি। কারণ দুটি ভিন্ন পরিবারের, ভিন্ন পরিবেশের মানুষ একসঙ্গে বসবাস শুরু করে। তাই কেউ কারো আচরণ, অভ্যাস সম্পর্কে অবগত থাকে না।
আজকাল পারিবারিকভাবে বিয়ের আগে দেখা-সাক্ষাৎ, মেলামেশার সুযোগ থাকলেও এত অল্প সময়ে একজন মানুষকে বুঝে ওঠা সম্ভব হয়ে ওঠে না। ফলে বিয়ের পর সঙ্গীর সাথে মানিয়ে নিতে তাই অনেকেই ছোটখাট সমস্যার সম্মুখীন হন। এক্ষেত্রে একটু ধৈর্য, সহনশীলতা আর কিছু পন্থা অবলম্বন করলেই অচেনা জীবনসঙ্গীকে আপন করে নিতে পারবেন খুব সহজেই।
পর্যবেক্ষণ করুন
একসঙ্গে বসবাস শুরু করার সঙ্গে সঙ্গেই একজন মানুষকে চট করে বোঝা যায় না। অন্তত তিন-চার মাস সময় নিন মানুষটিকে বোঝার জন্য। তার অভ্যাসগুলোকে পর্যবেক্ষণ করুন। আপনার কথা এবং কাজের ফলে তার করা প্রতিক্রিয়াগুলো খেয়াল করুন। তার পছন্দ-অপছন্দ, ভালোলাগা-খারাপলাগাগুলো জানার চেষ্টা করুন।
জানুন খাবারের রুচি
খাবারের ক্ষেত্রে বেশ সমস্যার সৃষ্টি হয়। অনেকেই অনেক খাবার খান না, বাছবিচার করেন। আবার অনেকের বিশেষ কোনও খাবারে অ্যালার্জি থাকে। তাই খাবারের ক্ষেত্রে একে অপরের সুবিধা-অসুবিধা, পছন্দ-অপছন্দগুলো জানার চেষ্টা করুন।
বন্ধুত্বে সহনশীলতা
আজকাল ছেলে বন্ধু এবং মেয়ে বন্ধুর মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য নেই। স্ত্রী হয়তো বিয়ের পর দেখলেন স্বামীর মেয়েবন্ধুর সংখ্যা বেশি। আবার এমনও হতে পারে যে স্ত্রীর ছেলেবন্ধুর সংখ্যা বেশি। সেক্ষেত্রে এ বিষয় নিয়ে উল্টাপাল্টা না ভেবে সঙ্গীর বন্ধুদের সঙ্গে ভাব জমান। এতে যেমন আপনাদের সম্পর্ক গাঢ় হবে, তেমনি আপনি পাবেন আপনার জীবনসঙ্গীর আস্থা ও শ্রদ্ধা।
সময় কাটান
কর্পোরেট এই যুগে দেখা যায় স্বামী-স্ত্রী দুজনেই বাইরে কাজ করেন। সময়ের অভাব সম্পর্ক গঠনের মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে নতুন জুটিদের ক্ষেত্রে দেখা দেয় নানা টানাপোড়েন। দুজনে দুজনার কাজের চাপ বুঝে, আলোচনা করে ঠিক করে নিন নিজেদের একান্তে থাকার সময়।
বেড়িয়ে আসুন দূরে কোথাও
বিয়ের পর পরই নবদম্পতির হানিমুন বা মধুচন্দ্রিমায় যাওয়াটা এখন একটা রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। একে অপরকে চেনা-জানা এবং কাছে আসার জন্য এটি একটি সুন্দর উপায়। মধুচন্দ্রিমায় যাওয়া হলেও বিয়ের পর মাঝে মাঝে এক বা দুদিনের জন্য সময় করে দূরে কোথাও বেড়াতে যান। এতে পরস্পরের কাছে আসার সুযোগটা বেড়ে যায়।
স্বভাব যখন আলাদা
দুজন আলাদা মানুষের স্বভাব কখনোই একরকম হয় না। আপনি যদি চুপচাপ, শান্ত স্বভাবের হন এবং আপনার সঙ্গী হই-হুল্লোড় পছন্দ করেন, তাহলে চেষ্টা করুন ওই পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে।
একসঙ্গে কেনাকাটা
প্রায় সব মেয়েই কেনাকাটা করতে পছন্দ করে। মেয়েরা সময় লাগিয়ে কেনাকাটা করে বলে অনেক স্বামীই স্ত্রীর সঙ্গে শপিংয়ে যেতে চান না। আবার অনেক মেয়ে আছেন যারা শপিংয়ের সময় কোনো পুরুষকে সাথে নিতে চান না। বিয়ের পর দাম্পত্যের শুরু দিকে দুজনে একসঙ্গে কেনাকাটা করুন। এতে একে অপরের রুচি, পছন্দ, আগ্রহ ইত্যাদি জানা যায়।
তিনি কি নাক ডাকেন?
বিয়ের প্রথম রাতেই আবিষ্কার করলেন, আপনার স্বামী বা স্ত্রী বেশ জোরেই নাক ডাকেন। আপাদৃষ্টিতে নাকডাকা বেশ হাস্যকর মনে হলেও তা কিন্তু বেশ চিন্তার কারণ। এটা ঘুমের বারোটা তো বাজাবেই, সেই সঙ্গে জন্ম দেবে চরম বিরক্তি। নাক বিভিন্ন কারণে ডাকতে পারে। অতিরিক্ত ঠাণ্ডা লাগা, নাকের পলিপ, হৃদরোগ ইত্যাদি যেকোনো কারণে নাক ডাকতে পারে। আপনার সঙ্গী কেন নাক ডাকে সেটা আগে বোঝার চেষ্টা করুন। তারপর তাকে জানান যে তিনি ঘুমানোর পর নাক ডাকেন। প্রয়োজনবোধে তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান।
বিডি-প্রতিদিন/২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, রাসেল/জান্নাত