বুড়িয়ে যাচ্ছে পৃথিবী, এগিয়ে যাচ্ছে বিজ্ঞান। চিকিৎসাবিদ্যায় খুলে যাচ্ছে নতুন নতুন দুয়ার। এবার বিজ্ঞানীরা এমন একটি চিকিৎসা পদ্ধতি আবিস্কার করেছেন যার সাহায্যে পরবর্তী ১৩ বছরের মধ্যে কোনো ব্যক্তি ক্যান্সারে আক্রান্ত হবেন কিনা তা ১০০ ভাগ নির্ভুলভাবে নিরূপন করা যাবে।
হার্ভার্ড এবং নর্থ ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবিষ্কৃত এ পদ্ধতিতে এক দশকেরও বেশি সময় আগেই শরীরের সামান্য কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তন চিহ্নিত করে ক্যান্সারের পূর্বাভাস দেয়া হবে।
কিভাবে?
ক্রোমোজমের শেষ প্রান্তে একটি প্রতিরক্ষামূলক ক্যাপের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এই ক্রোমোজম ডিএনএ'র ক্ষতি রোধ করে থাকে। যাদের ক্যান্সার হবে তাদের এই প্রতিরক্ষামূলক ক্যাপ ধীরে ধীরে ক্ষয় হতে শুরু করবে।
বিজ্ঞানীরা এই ক্যাপের নাম দিয়েছেন টেলোমেয়ার। এই টেলোমেয়ার স্বাভাবিকের চেয়ে বেশ ছোট অবস্থায় থাকে এবং এটা ক্রমাগতভাবে ছোট হতে থাকে এবং ক্যান্সারের বিকাশ সাধন হওয়ার আগ পর্যন্ত একটানা প্রায় চার বছর পর্যন্ত ছোট হতে থাক। এ ধরনের পরির্তন যাদের ক্ষেত্রে ঘটে তারাই ক্যান্সারে আক্রান্ত হন।
নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয় ফেইনবার্গ স্কুল অব মেডিসিনের প্রিভেন্টিভ মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ও এই গবেষণার প্রধান গবেষক ড. লিফাঙ্গ হৌ বলেন, 'টেলোমেয়ার বৃদ্ধির এই প্যাটার্ন বুঝতে পারার মানে হচ্ছে এটা ক্যান্সারের বায়োমারকারের একটি ভবিষ্যদ্বাণী।'
তিনি বলেন, 'আমরা দেখেছি বিভিন্ন ধরণের ক্যান্সার প্যাটার্নের সাথে এর একটি জোরালো সম্পর্ক রয়েছে। এই প্রক্রিয়ার সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার নির্ণয় করা যেতে পারে।'
আর আগেভাগে ক্যান্সারের বিষয়টা জানতে পারলে জীবনধারায় পরিবর্তন এনে ঝুঁকি অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন গবেষকরা।
নতুন এই সমীক্ষায় দেখা গেছে, বিজ্ঞানীরা প্রায় ১৩ বছর ধরে ৭৯২ ব্যক্তির ওপর টেলোমেয়ার নিয়ে একাধিকবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। শেষ পর্যন্ত এদের মধ্যে ১৩৫ জনের প্রস্টেট, চামড়া, ফুসফুসসহ বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার নির্ণয় করা সম্ভব হয়েছে।
সূত্র: ডেইলি টেলিগ্রাফ
বিডি-প্রতিদিন/২৬ জুন ২০১৫/ এস আহমেদ