ভূমিকম্প সাধারণত কোনো পূর্বাভাস ছাড়াই সংঘটিত হয়ে থাকে। তাই এর ক্ষয়ক্ষতিও অনেক বেশি হয়ে থাকে। ভূমিকম্প যেহেতু আচমকা সংঘটিত হয়ে থাকে সেহেতু অনেকেই তাৎক্ষণিক বুঝে উঠতে পারেন না কী করবেন। তবে একটু সচেতন হলে এবং কয়েকটি বিষয় মেনে চললে সহজেই ভূমিকম্পের ধাক্কা থেকে যথাসম্ভব বেঁচে থাকা সম্ভব। নিচে ভূমিকম্পের সময় করণীয় কী তা নিয়েই আলোচনা করা হলো :
১. ভূকম্পন অনুভূত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাসার বিদ্যুৎ ও গ্যাসলাইন বন্ধ করে ফেলুন।
২. ঘরে হেলমেট থাকলে সঙ্গে সঙ্গে মাথায় পরে নিন।
৩. এক মিনিট সময়ের মধ্যে বাসা থেকে বের হয়ে পড়ুন। আর সম্ভব না হলে তখনই মজবুত টেবিল, খাটের নীচে কিংবা পিলারের সঙ্গে অবস্থান করুন। মাথা রক্ষার জন্য বালিশ হাতের কাছে রাখতে পারেন।
৪. বাসা থেকে বের হওয়ার সময় সম্ভব হলে খাবার পানি ও শুকনো খাবার থাকলে সেগুলো সঙ্গে নিয়ে বের হন।
৫. বাসা থেকে বের হয়ে যতটা সম্ভব খোলা জায়গায় গিয়ে অবস্থান করুন।
৬. বের হওয়ার সময় লিফট ব্যবহার না করাই ভালো। বিদ্যুৎ বিপর্যয় ঘটতে পারে। তখন লিফট হয়ে উঠতে পারে মরণফাঁদ।
৭. ভবন থেকে বের হওয়ার সময় সিঁড়ি ব্যবহার করুন। কিন্তু ভুল করেও সিঁড়িতে আশ্রয় নেবেন না। ভবন ধসে পড়লে সবার আগে সিঁড়ি ধসে পড়ার শঙ্কাই বেশি থাকে।
৮. তাড়াহুড়ো করবেন না। যথাসম্ভব মাথা ঠাণ্ডা রাখুন।
৯. গাড়িতে থাকলে যথাসম্ভব নিরাপদ স্থানে থাকুন। আশপাশে বড় ভবন নেই এমন জায়গায় গাড়ি পার্ক করতে পারেন। কখনো সেতুর ওপর গাড়ি থামাবেন না।
১০. টাকা বা অলঙ্কারের মতো কোনো কিছু সঙ্গে নেওয়ার জন্য অযথা সময় নষ্ট করবেন না। মনে রাখবেন, জীবনটাই সবচেয়ে বড় সম্পদ। ভূমিকম্প মাত্র কয়েক সেকেন্ডেই ভয়ংকর সর্বনাশ ঘটাতে পারে।
১১. বড় ভূমিকম্পের পর পরই আরেকটা ছোট ভূমিকম্প (আফটার শক) হতে পারে। তাই একবার ভূমিকম্প থেমে গেলেই নির্ভার হবেন না। সতর্ক থাকুন এবং বেশ কিছু সময় পর্যন্ত নিরাপদ স্থানে অবস্থান করুন।
১২. ঘটনার পর চিহ্নিত মিলিত স্থানে অবস্থান করুন, যাতে করে যেকোনো সমস্যা একসঙ্গে মোকাবিলা করতে পারেন।
১৩. যদি ভবন ধসে আটকাও পড়েন, বেরিয়ে আসার কোনো পথ খুঁজে না পান, আশা হারাবেন না। সাহস রাখুন। সাহস আর আশাই আপনাকে বাঁচিয়ে রাখবে। ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করুন। উদ্ধারকারী পর্যন্ত আপনার চিৎকার বা সংকেত পৌঁছানো যায় কী করে, ভাবতে থাকুন।
বিডি-প্রতিদিন/১৫ এপ্রিল ২০১৬/শরীফ