মা বলে ডেকে ডেকে হয়ে গেছি মাতৃহন্তারক
ক্ষমা কর জননী, নদীমাতৃক বাংলাদেশ
আমাদের বিবেচনাবোধ লুপ্ত, অনুতাপ অনুপস্থিত
মায়াকান্নার শেষ নেই, কৃত্রিম বিলাপও আছে
শুধু নেই মর্মমূল থেকে উৎসারিত টলটলে অশ্রু
ষোল কোটি সন্তান যদি সত্যিকার কাঁদতে পারতাম
চোখের জলে সামান্য হলেও লাবণ্য ফিরতো তোমার
হে নদী হে জননী আমার
তোমার পাঁজরে পুঁতেছি বাঁশ ও শুষ্ক পাথর
তোমার উদরে ঠেসেছি বিচিত্র বিষাক্ত বর্জ্য
হৃৎপিণ্ড দুই ভাগ করে রাস্তা তৈরি করেছি
মোটরযান উঠিয়ে দিয়েছি তাতে
তোমার নাড়ি পেঁচিয়ে ধরতে দিয়েছি
মমতাময়ীর মুখোশ-অাঁটা পড়শি সর্পিণীকে
রক্তপ্রবাহের সব পথ আজ রুদ্ধ
তুমি আমার ধাত্রী, তুমিই প্রথম প্রেম
আমার শৈশবের সবটুকু আনন্দ তোমাকে ঘিরেই
জীবনের জল প্রাণের রসদ সব তোমারই দান
আর তোমাকে হত্যার উৎসবেই মেতেছি!
এই খরবৈশাখে তোমার মুমূর্ষু মুখ দেখে
ছটফট করতে থাকা প্রাণ প্রত্যক্ষ করে
বাংলার অসহায় একাকী নগণ্য এক কবি
গ্লানিতে অধোবদন- তুমি ক্ষমা করে দিও মাগো...