চেনা জানা পরিচিতজনরা এখন আর অসুস্থতার কথা বলতে চায় না। কিন্তু অনেকেই জ্বর কাশিসহ অন্য অসুখে আক্রান্ত হচ্ছে। চিকিৎসা সেবার অব্যবস্থাপনার কারণে হাসপাতালে যায় না। যার ফলে ঘরে থেকে চিকিৎসা করে সুস্থ হলেও জানা সম্ভব হচ্ছে না তারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে কিনা। কারণ মানুষ টেস্টের ভোগান্তি পোহাতে নারাজ। আবার টেস্ট পজিটিভ এ বিষয় জানাজানি হলে হাসপাতালে যাওয়া নিয়ে শুরু হয় আরেক হয়রানি। হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থার সংকটের কারণে রোগ নিয়ে ঘুরতে হয় হাসপাতালে হাসপাতালে। অক্সিজেন আর আইসিইউ না পেয়ে মৃত্যুর করুন চিত্র প্রতিনিয়ত দেখছে মানুষ। এসব কারণে মানুষ চিন্তা করে মরতে হলে ঘরে মরবে তবু হাসপাতালে যাব না। এমনকি পরিবার পরিজনরাও চায় না রোগীকে সহজে হাসপাতালে দিতে। এ কথাগুলো হয়ত নতুন কিছু নয়। কিন্তু যখন দেখা যায় কোভিড১৯ টেস্টের নামে মিথ্যা রিপোর্ট দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে ; তখন মানসিক ভাবে নিজেকে ঠিক রাখা অসম্ভব হয়। মানুষ রুপী এ অমানুষ গুলো সমাজের অভিশাপ।
সারা বিশ্বের মত এ দেশের মানুষও মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে আছে। মহামারি এ দিন কবে শেষ হবে কেউ জানে না। প্রতিদিন কেউ না কেউ হারাচ্ছে আপনজনকে। সেখানে চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের মিথ্যা টেস্ট রিপোর্টের ব্যবসা বলে দেয় কতটা অনিয়ম দুর্নীতি চলছে দেশে। জেকেজি হেলথকেয়ার এ মহামারীর সময় যে প্রতারণার করেছে তা সীমাহীন অপরাধ। তাই প্রশ্ন উঠে কিসের জোরে তারা এ ধরনের কাজ করার সাহস পায়?
করোনাভাইরাস নিয়ে আতংকিত মানুষ। একটা টেস্ট করা নিয়ে রোগী আর তার পরিবার কতটা ভোগান্তি পড়ছে তা সবার জানা। আর মানুষের করুন দশাকে পুঁজি করে ব্যবসা করেছে জেকেজি। ক্ষমতার দাপট ছাড়া এ কাজ করা কঠিন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দায়বদ্ধতা ও প্রশ্নবিদ্ধ।
স্বাস্থ্যসেবা খাতের অনিয়ম দুর্নীতির কথা কোভিড ১৯ এর শুরু থেকেই জনগণের কাছে স্পষ্ট। কিন্তু দুঃখজনক হলো, দুর্নীতির দৌঁঁড় চলমান। আর সে কারণে জেকেজি মিথ্যা রিপোর্ট দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়ার সাহস করতে পারে। জেকেজির এ অপকর্ম অমানবিকতার চূড়ান্ত রূপ ।
যেখানে বাংলাদেশে মানুষ এখন অবধি করোনাভাইরাসের টেস্ট, চিকিৎসা নিয়ে আস্থাহীন। সেখানে জেকেজিয়ের মিথ্যা প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড দেখে মানুষ হতবিহ্বল।
দেশের মানুষ আর কত সহ্য করবে এসব অনিয়ম দুর্নীতি। কোভিড ১৯ এ লাশের সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু পরিবর্তন আসেনি স্বাস্থ্যসেবায়। সাধারণ জনগণের অসহায়ত্ব আর হাহাকার বাড়ছে কেবল। উপায়ান্তে জনগণকে বাঁচা মরাকে বিধাতার বিধি বলে মেনে নিতে বাধ্য করছে এদেশের দুর্নীতি আর অনিয়ম। কারণ সাধারণ জনগণের কথা শোনার জন্য কেউ নেই।
লেখক: কলামিস্ট।