এশিয়ান-আমেরিকানদের ন্যায্য হিস্যা আদায়ে মার্কিন কংগ্রেসে সংঘবদ্ধভাবে কাজের অঙ্গীকারে গঠিত ‘কংগ্রেসনাল এশিয়ান প্যাসিফিক আমেরিকান ককাস লিডারশিপ প্যাক’-এর চেয়ারপারসন হলেন কংগ্রেসওম্যান (নিউইয়র্ক-ডেমক্র্যাট) গ্রেস মেং। গত বুধবার (১৩ এপ্রিল) ওয়াশিংটন ডিসিতে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের এশিয়ান-আমেরিকান ১৪ কংগ্রেসম্যান হচ্ছেন এ সংস্থার সদস্য। তাদের মধ্যেই এ নির্বাচন প্রক্রিয়া অনুষ্ঠিত হয়। ক্যালিফোর্নিয়ার কংগ্রেসওম্যান (ডেমক্র্যাট) জুডি চু’র স্থলাভিষিক্ত হলেন গ্রেস মেং। জুডি চু ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা চেয়ার।
মার্কিন কংগ্রেসে এশিয়ানদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত এবং এশিয়ান-আমেরিকানদের অধিকার ও মর্যাদার ব্যাপারে সংবেদনশীল রাজনীতিকদের সমর্থন জ্ঞাপন এবং সর্বোপরি এশিয়ার দেশসমূহের কল্যাণে মার্কিন প্রশাসনকে অধিক মনোযোগী করার অভিপ্রায়ে এ সংস্থা কাজ করছে।
সদ্য বিদায়ী চেয়ার জুডি চু এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘মূলধারার রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় আমাদের এ সংস্থাটি নেতৃত্ব, ক্ষমতায়ন, যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে সোচ্চার রয়েছে। গত দুটি নির্বাচনে (২০১২ এবং ২০১৪) আমরা সাফল্য প্রদর্শনে সক্ষম হয়েছি। যার মাধ্যমে আমাদের ১৪ কংগ্রেসম্যান ছাড়াও আরো অনেকে এশিয়ান-আমেরিকানদের স্বার্থে কাজ করতে উৎসাহবোধ করছেন।’
জুডি চু আরও বলেন, ‘আসছে নভেম্বরের নির্বাচনের গুরুত্ব জাতীয় এবং সম্প্রদায়গতভাবে অপরিসীম। এ অবস্থায় আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে যে, সহকর্মী গ্রেস মেং-এর দূরদর্শিতা এবং বিচক্ষণতাপূর্ণ নেতৃত্বে সংস্থাটি আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সক্ষম হবে।’
২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত এ সংস্থার সংঘবদ্ধ চেষ্টায় ২০১২ সালের নির্বাচনে সিনেট ও প্রতিনিধি পরিষদে নতুন ৬ প্রার্থীকে জয়ী করতে সক্ষম হয়। এরা হলেন: হাওয়াইয়ের সিনেটর (ডেমক্র্যাট) ম্যাজি কে হীরনো, ক্যালিফোর্নিয়ার কংগ্রেসম্যান এ্যামি বেরা, ইলিনয়ের (ডেমক্র্যাট) ট্যামি ডাকয়োর্থ, হাওয়াইয়ের (ডেমক্র্যাট) কংগ্রেসওম্যান তুলসী গ্যাবর্ড, নিউইয়র্কের (ডেমক্র্যাট) গ্রেস মেং এবং ক্যালিফোর্নিয়ার (ডেমক্র্যাট) মার্ক ট্যাকানো। এর দু’বছর পর ২০১৪ সালের নির্বাচনে ক্যালিফোর্নিয়ার (ডেমক্র্যাট) টেড লিউ এবং হ্ওায়াইয়ের (ডেমক্র্যাট) মার্ক টাকাই কংগ্রেসম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
নবনির্বাচিত চেয়ারপারসন গ্রেস মেং বলেন, ‘আমাদেরও জায়গা রয়েছে মার্কিন কংগ্রেসহ প্রশাসনের সর্বস্তরে-এমন চেতনায় উদ্ভাসিত করতে হবে এশিয়ান আমেরিকান অ্যান্ড প্যাসিফিক আইল্যান্ডার্স’ কম্যুনিটিকে। আর এ উদ্যম কাজে লাগিয়েই আমাদের আমেরিকান স্বপ্ন পূরণে যাকে সবচেয়ে বেশি নির্ভরযোগ্য মনে হবে, তাকে নির্বাচনে বিজয়ী করতে একযোগে কাজ করতে হবে। আমার নির্বাচনে এই সংস্থাটি যে ভাবে কাজ করছে, তা আমি কখনোই ভুলবো না। সেই একইচেতনায় সকলকে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে, যে সব এলাকায় এশিয়ান-আমেরিকানের সংখ্যা বেশি, সেগুলো থেকে নিজেদের প্রার্থীর বিজয়ে অর্থ-শ্রম-মেধার বিনিয়োগ ঘটাতে হবে অকৃপণভাবে।’ সামনের নভেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে সিনেট ও কংগ্রেসে মোট ৪০ জন এশিয়ান লড়ছেন। এদের বিজয় নিশ্চিতে যাবতীয় কাজ করবে এই সংগঠন
নিউইয়র্ক সিটির কুইন্স এবং ফ্লাশিং এলাকায় বাংলাদেশি ও চাইনিজদের বিপুল সমর্থনে কংগ্রেসওম্যান নির্বাচিত হয়েছেন গ্রেস মেং। এটি তার দ্বিতীয় টার্ম। সামনের নভেম্বরেও তাকে ফের ভোটে অবতীর্ণ হতে হচ্ছে। তবে তার বিরুদ্ধে কোন প্রার্থী না থাকায় নিজের প্রচারণার প্রয়োজন হচ্ছে না। গ্রেস মেং হচ্ছেন নিউইয়র্ক রাজ্য থেকে নির্বাচিত প্রথম এশিয়ান কংগ্রেসওম্যান। তিনি কংগ্রেসনাল বাংলাদেশ ককাসের সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ নিয়েও কাজ করেন মার্কিন কংগ্রেসে।
যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার ৬% অর্থাৎ ২ কোটি হলেন এশিয়ানরা। ২০০২ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ১২ বছরে এশিয়ান-আমেরিকানদের সংখ্যা বৃদ্ধির হার হচ্ছে ৪৬%। যুক্তরাষ্ট্রে সবচে' বেশি বৃদ্ধি পাওয়া জনগোষ্ঠীর শীর্ষে রয়েছে এশিয়ানরা। যুক্তরাষ্ট্র সেনসাস ব্যুরোর পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী ২০৫০ সালে এশিয়ানদের সংখ্যা বাড়বে ১৫০ ভাগ।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৬ এপ্রিল, ২০১৬/ রশিদা