প্রায় এক বছর আগে মালয়েশিয়া সরকারের ঘোষিত শ্রমিক বৈধকরণ প্রক্রিয়ার শেষ হতে বাকি আর মাত্র ২৪ দিন। শেষ সময়ে এসে তাই নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছে দেশটির ইমিগ্রেশন ও বাংলাদেশ দূতাবাস।
মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশনের ১৬ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে এমনটি আলোচনা হয়। তবে মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশনের বড় কর্মকর্তারা এই প্রথম বাংলাদেশ দূতাবাসে এসে জরুরি বৈঠক করলেন বলে জানালেন দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর সায়েদুল ইসলাম।
বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় মালয়েশিয়া দূতাবাসের হলরুমে শ্রম কাউন্সেলরের সভাপতিত্বে অনুষ্টিত জরুরি বৈঠকে নেতৃত্ব দেন মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশন বিভাগের ফরেন এফেয়ার্স ডিভিশনের প্রধান দাতু খাইরিল, ডাইরেক্টর ডিটেনশন সালেহা, ডাইরেক্টর ইনফোর্সমেন্ট সারভানান। দূতাবাসের কমার্শিয়াল উইং প্রধান ধনঞ্জয় কুমার দাস, শ্রম শাখার প্রথম সচিব মো. হেদায়েতুল ইসলাম মন্ডল, শ্রম শাখার ২য় সচিব মো. ফরিদ আহমদ ও ২য সচিব (রাজনৈতিক) তাহমিনা ইয়াছমিন। এছাড়া মাই-ইজি, বুক্তিমেঘা ও ইমান কোম্পানির প্রতিনিধিরাও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
২০১৬ সালের ৩০ জুন থেকে রি-হিয়ারিংয়ের আওতায় তিনটি ক্রাইটেরিয়ার মাধ্যমে বিদেশি শ্রমিকদের বৈধকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়। আর এ প্রক্রিয়া শেষ হচ্ছে চলতি মাসের ৩১ তারিখ। দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগের কড়া নজর দারিতে শেষ সময়ে মাই-ইজি, বুক্তিমেঘা ও ইমান কোম্পানির এ তিনটি ভেন্ডরে নিবন্ধনের কাজ নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছে দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ ও বাংলাদেশ দূতাবাস।
মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক শেষে শ্রম কাউন্সেলর সায়েদুল ইসলাম দেশটিতে কর্মরত ইলেক্ট্রনিক, প্রিন্ট ও অনলাইন সাংবাদিকদের বলেন, মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশি অবৈধ কর্মী যারা এখনো নিবন্ধিত হয়নি আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তাদের নিবন্ধিত হওয়ার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানান।
সায়েদুল ইসলাম বলেন, শুধুমাত্র মাই-ইজি, বুক্তিমেঘা ও ইমানে যারা নিজ নিজ কোম্পানির মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশনের পর ইমিগ্রেশনে আঙ্গুলের চাপসহ নিবন্ধিত হবেন তারাই এদেশে বৈধ হিসেবে গণ্য হবেন।
সাইদুল ইসলাম আরো জানান, যারা বিভিন্ন কোম্পানির মাধ্যমে মাইইজি, বিএম ও ইমানে নিবন্ধন করে দীর্ঘদিন পরও মালিক পক্ষ অভিবাসন বিভাগে নিবন্ধন করছেন না বা মালিকের আর খোঁজ-খবর নেই, তারা মাইইজি, বিএম ও ইমানের অফিসে সরাসরি যোগাযোগ করলে অন্য কোনো কোম্পানির মাধ্যমে নিবন্ধিত হওয়ার সুযোগ পাবেন। এজন্য শ্রমিককে অতিরিক্ত ফি দিতে হবে না বলেও ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। ইতিমধ্যে মাই- ইজি কোম্পানি দূতাবাসের পার্শে একটি বুথ স্থাপন করেছে কর্মীদের সুবিধার্থে। এবং যেকোন বিষয়ে সরাসরি জানতে মাই-ইজি চলতি মাসের প্রথম থেকে একটি হটলাইন নম্বরও চালু করেছে।
০৩৭৬৬৪৮৫৫৫ এ হটলাইনে কর্মীরা তাদের অবস্থান জানতে পারবেন। এর পাশাপাশি এই তিনটি ভেন্ডরের কার্যক্রম প্রতিদিন পর্যবেক্ষণ করবে। এছাড়া যদি কেউ মিডিলমেনদের দ্বারা প্রতারিত হন সে বিষয়টিও দূতাবাসে জানাতে হবে।
বাকি দুইটি কোম্পানিও খুব শিগগিরই শ্রমিকদের বৈধকরণ প্রক্রিয়ার সর্বশেষ অবস্থা জানতে হটলাইন চালু করছে। পরে দূতাবাসের মাধ্যমে তা সকলকে জানিয়ে দেওয়া হবে।
রি-হিয়ারিংএর আওতায় যারা সকল প্রক্রিয়া শেষ করেও পাসপোর্ট হাতে পাননি এমনটি হলে দ্রুত শ্রম শাখায় জানাতে বলেছেন শ্রম কাউন্সেলর।
বিডি-প্রতিদিন/০৭ ডিসেম্বর, ২০১৭/মাহবুব