সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ বলেছেন, এখন স্কুলগুলোতে হিউম্যানভ্যালুজ সম্পর্কে তুলে ধরা হয় না। বাবা-মারাও বাচ্চাদের শিক্ষা দেয়ার চেষ্টা করি প্রতিষ্ঠিত হও। এই প্রতিষ্ঠিত হওয়ার প্রতিযোগিতায় হারিয়ে যাচ্ছে তারা। আজকাল বাচ্চারা বাংলাদেশের ইতিহাস সম্পর্কে জানে না। ইতিহাস পড়ার কোন আগ্রহও নাই তাদের। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় এটা একটা বিরাট ব্যর্থতা। আমি এখনো ইন্টারনেট খুললে বাংলাদেশের ইতিহাস জানার চেষ্টা করি। এখন আমাদের সবাই প্রতিযোগিতা করি কিভাবে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হবো, কিভাবে টাকা কামাবো। ধর্ম-কর্ম, ইহকাল-পরকাল ভুলে গিয়ে ছুটছি আমরা টাকার পিছু। সুনামের জন্য নয় আমাকে পরকালে এম্বাসেডর হিসাবে দিতে হবে সেজন্য কাজ করি।
বৃহস্পতিবার রাতে রিয়াদের একটি অডিটোরিয়ামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই এ্যাসোসিয়েশন রিয়াদ চ্যাপ্টারের অভিষেক ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমি ১৯৭৫সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাই। আমার বাবাও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগের দুজন কাউন্সিলর ছিলেন একজন আওয়ামী লীগের প্রথম সেক্রেটারি জেনারেল সামসুল হক আরেকজন আমার বাবা আব্দুল আউয়াল। দুজনই খুব সাধারণ জীবন-যাপন করতেন। বাবার মুখে শুনা ১৯৪০ সালে তিনি দাদীর হাতের বালা বন্ধক দিয়ে কাউন্সিলে গিয়েছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সবচেয়ে বেশি ইউনিকটা প্রত্যেকটা ছাত্রের মধ্যে সততা, একটা ভিশন বা একটা কমিটমেন্ট ছিলো সে যে দলেরই হোক। আগেকার শিক্ষকরা শুধু বই পড়াতোনা হিউম্যান ভ্যালুজ কি হওয়া উচিৎ সেটা তুলে ধরতেন।
সংগঠনের ভাইস প্রেসিডেন্ট কিং সৌদ বিশ্ববিদ্যালয়ের এসোসিয়েট প্রফেসর ডক্টর রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক কবি ও সাহিত্যিক শাহজাহান চঞ্চলের সাবলীল সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ দূতাবাস রিয়াদের মিশন উপ প্রধান ডক্টর মোঃ নজরুল ইসলাম। অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ দূতাবাস রিয়াদের মিনিস্টার সৈয়দ এসএম আনিসুল হক, প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাঈদ সিদ্দিকী, কাউন্সিলর (শ্রম কল্যাণ) মোঃ মেহেদী হাসান, রিয়াদ বাংলা স্কুল পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মোসতাক আহমেদ, অধ্যক্ষ আফজাল হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের পৃষ্টপোষক আ.ক.ম রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
সংবর্ধিত অতিথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই এসোসিয়েশন রিয়াদ চ্যাপ্টারের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ও সদ্য নিয়োগ পাওয়া বাংলাদেশ দূতাবাস বাহারাইনের রাষ্ট্রদূত ডক্টর মোঃ নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের স্মৃতিচারণ করে বলেন, আমি বরিশালের ছেলে। অন্যকোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার আগ্রহ ছিলো না। আমি বলেছিলাম পড়লে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই পড়বো না হয় বরিশালেই থেকে যাবো। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইকনোমিকসে ভর্তির সুযোগা পাই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই এসোসিয়েশন রিয়াদ চ্যাপ্টারের সদস্যদেরকে কোটপিন ও পরিচয়পত্র তুলে দেন প্রধান অতিথি ও সংবর্ধিত অতিথি। এর আগে অনুষ্ঠানে আগত সকল অতিথিদেরকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন সংগঠনের সদস্যরা। ক্রেস্ট প্রদান করেন এক্সিকিউটিভ মেম্বার সানজিদা বেগম এবং আক্তার জাহান। সংবর্ধিত অতিথিকে দেয়া মানপত্র পাঠ করেন এসোসিয়েশনের ট্রেজারার মোঃ মাহবুবুর রহমান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের মহাসচিব রঞ্জন কর্মকার স্বাক্ষতির রিয়াদ চ্যাপ্টারের অনুমোদিত কমিটির প্রধান পৃষ্টপোষক রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ, পৃষ্টপোষক রফিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ আলী নুর সভাপতি, ডক্টর রেজাউল করিম ভাইস প্রেসিডেন্ট, মোঃ মাহবুবুর রহমান ট্রেজারার, এম শাহজাহান চঞ্চল জেনারেল সেক্রেটারি, মোঃ আফজাল হোসেন এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি হিসেবে রয়েছেন। এক্সিকিউটিভ কমিটির মেম্বার হিসেবে আছেন ডক্টর মোঃ নজরুল ইসলাম, মোঃ সারোয়ার আলম, মোঃ মেহেদী হাসান, শেখ শহীদুল ইসলাম, কাজী নুরুল ইসলাম, মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান, মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, মোহাম্মদ মোসতাক আহমেদ, মোঃ রফিকুল ইসলাম, মোঃ রেদওয়ানোর রহমান, এডভোকেট মোহঃ সাঈদ আহমেদ, মামুনুর রশিদ, মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম মারুফ, সানজিদা ইসলাম, আক্তার জাহান এবং নিষাদ আঞ্জুমান।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন