বছরের প্রথমদিনেই যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি পরিবারে কিছুটা স্বস্তি এসেছে ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, ওয়াশিংটন ডিসি, ম্যারিল্যান্ড এবং কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্য শাখার অনুমোদন আসায়। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কর্তৃক ৩০ ডিসেম্বর স্বাক্ষরিত পত্রে জর্জিয়া রাজ্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি এবং অপর ৪ অঙ্গরাজ্যের আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন এসেছে।
শিগগিরই ভার্জিনিয়া, নিউজার্সি, টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের অনুমোদনও পাওয়া যাবে বলে বিএনপি হাই কমান্ড সূত্রে এ সংবাদদাতা জানতে পেরেছেন। চলতি মাসেই নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্য শাখা গঠনের কাজও সম্পন্ন হবে।
উল্লেখ্য, ৮ বছর আগে লন্ডনে কয়েকজনকে ডেকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি ভেঙে দেন সে সময়ের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন) তারেক রহমান। এরপর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি নেই। এ নিয়ে নানা দেন-দরবারের মধ্যেই অঙ্গরাজ্যসমূহে সাংগঠনিক কমিটি জোরদারের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। সে আলোকে বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে তিন বছর আগে নতুন কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়। তার অধিকাংশই তেমন তৎপরতা দেখাতে সক্ষম না হওয়ায় উপরোক্ত ৫ রাজ্যে পূর্ণাঙ্গ/আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেয়া হলো। তবে সাংগঠনিকভাবে তেমন তৎপরতা পরিলক্ষিত না হলেও মিশিগান, ইলিনয়, ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি এখনও বহাল রয়েছে।
অঙ্গরাজ্যভিত্তিক কমিটি গঠন/পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খোকন। বেশ কয়েক দফা বিভিন্ন রাজ্য সফরের পর লন্ডনে ফিরে তিনি কমিটির খসরা পেশ করেছিলেন তারেক রহমানের কাছে। এরপরই তা পর্যালোচনার পর পাঠানো হয় ঢাকায় বিএনপির সদর দফতরে।
বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে মহাসচিবের অনুমোদনপ্রাপ্ত কমিটির তথ্য অনুযায়ী ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্য বিএনপির আহ্বায়ক এবং সদস্য-সচিব হচ্ছেন যথাক্রমে এমরানুল হক চাকলাদার এবং ইলিয়াস খান। বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি দিনাজ খান এবং সাধারণ সম্পাদক আরিফ আহমেদ আশরাফকেও এই কমিটির সদস্য রাখা হয়েছে।
জর্জিয়া বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন যথাক্রমে নাহিদুল এইচ খান সাহেল এবং মামুন শরীফ (আমজাদ)।
ম্যারিল্যান্ড রাজ্যে আহ্বায়ক শহীদ খান চৌধুরী এবং সদস্য-সচিব ইঞ্জিনিয়ার সেলিম হোসেন। ওয়াশিংটন ডিসি বিএনপির আহ্বায়ক-হাফিজ খান সোহায়েল এবং সদস্য-সচিব এ জে এম হোসেন।
কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্য বিএনপির আহ্বায়ক হয়েছেন তৌফিকুল আম্বিয়া টিপু এবং সদস্য-সচিব আনোয়ার হোসেন হিমু। অঙ্গরাজ্যভিত্তিক কমিটি গঠনের এ প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন (১৯৮৭) সময় থেকে এখন পর্যন্ত যারা সক্রিয় রয়েছেন তাদের মধ্যে চরম হতাশা দেখা দিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি আলহাজ আব্দুল লতিফ সম্রাট বলেন, ‘আমার পদ-পদবির কোনো আকাঙ্খা নেই। তবে যারা দীর্ঘদিন শ্রম-মেধা দিয়েছেন প্রবাসে বিএনপির রাজনীতিকে বহমান রাখতে, তাদের পক্ষে কী অঙ্গরাজ্য কমিটিতে যাওয়া সম্ভব? যাদের সাংগঠনিক দক্ষতা রয়েছে গোটা আমেরিকায় এবং সে ধরনের বহু পরীক্ষায় তারা উত্তীর্ণ হয়েছেন ১/১১ পরবর্তী সময়ে, তাদের পক্ষে অঙ্গরাজ্য কমিটিতে নেমে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে আত্মহত্যার সামিল।’
ফ্লোরিডায় বসবাসরত বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মনির হোসেন কাজল বলেন, বিএনপির চরম দুর্দিনে আন্তর্জাতিক লবিংয়ে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির গুরুত্ব অপরিসীম। অথচ হাই কমান্ডে সেই মূল্যায়ন নেই। এটি হচ্ছে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের আদর্শে উজ্জীবিতদের জন্যে খুবই দুর্ভাগ্যের একটি বিষয়।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম