জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে আন্তর্জাতিক পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে রাষ্ট্রসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো।
Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman International Prize in the field of Creative Economy নামে এ আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রদান করা হবে। গত ১১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ইউনেস্কো নির্বাহী পরিষদের শরৎকালীন ২১০তম অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
‘সৃজনশীল অর্থনীতি’ অঙ্গনে এই প্রথম একটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রবর্তিত হল। এ পুরষ্কার সৃজনশীল অর্থনীতিতে যুব সমাজের উন্নয়নে সংস্কৃতিকর্মী, প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা কর্তৃক গৃহীত ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগকে স্বীকৃতি দেবে। উল্লেখ্য, সৃজনশীল অর্থনীতি ক্ষেত্রে "ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধু" পুরস্কার হবে সংস্থা কর্তৃক প্রবর্তিত প্রথম আন্তর্জাতিক পুরস্কার।
ইউনেস্কো সদর দপ্তরে গত ২-১১ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে অনুষ্ঠিত ৫৮ সদস্য বিশিষ্ট ইউনেস্কো নির্বাহী পরিষদের ২১০তম অধিবেশনের প্রথম পর্বে এ প্রস্তাবটি বিবেচনার জন্য ইউনেস্কো সচিবালয় উত্থাপন করে। ১১ ডিসেম্বর নির্বাহী পরিষদের প্লেনারি সেশনে সর্বসম্মতিক্রমে এ প্রস্তাব গৃহীত হয়। এর আগে গত ৯ ডিসেম্বর নির্বাহী পরিষদের যৌথ কমিটির সভায় প্রস্তাবটি ইউনেস্কোতে প্রাথমিকভাবে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হবার পর ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি জনাব কাজী ইমতিয়াজ হোসেন পরিষদের সকল সদস্য রাষ্ট্রকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর জীবন শান্তি ও মানবতার জন্য উৎসর্গ করেছিলেন। তাঁর শান্তির দর্শন ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’ বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতির মূলনীতি হিসেবে স্বীকৃত। তার নামে মুজিববর্ষে একটি আন্তর্জাতিক পুরষ্কার প্রবর্তনের ইউনেস্কোর এই সিদ্ধান্ত বৈশ্বিক শান্তি ও মানবতার প্রতি তার অবদানের যথার্থ স্বীকৃতি। আমাদের জাতির পিতাকে সম্মানিত করে ইউনেস্কো বাঙালি জাতিকে সম্মানিত করেছে।”
ইউনেস্কো শিক্ষা, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রভৃতিসহ স্বীয় অধিক্ষেত্রে বিভিন্ন অঙ্গনে অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ সদস্য রাষ্ট্রসমূহের আর্থিক সহযোগিতায় আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রবর্তন করে থাকে। ইউনেস্কো অধিক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খ্যাতিমান ব্যক্তি তথা প্রতিষ্ঠানের নামে ২৩টি ইউনেস্কো আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রবর্তিত রয়েছে। এই প্রথম বাংলাদেশ তথা বাংলাদেশের কোন প্রথিতযশা সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তির নামে ইউনেস্কো একটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রবর্তন করল।
ইউনেস্কো ২০১৭ সালে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ ‘মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ আন্তর্জাতিক রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত করে। এর আগে ১৯৯৯ সালে, ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে ঘোষণা করার মাধ্যমেও ইউনেস্কো বাংলাদেশকে সম্মানিত করে। এছাড়া ষাট গম্বুজ মসজিদ, পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার এবং সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে এবং বাউল গান, জামদানি, মঙ্গল শোভাযাত্রা ও শীতল পাটি বিশ্ব অপরিমেয় ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশকে সুপরিচিত করেছে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন