নিউজার্সিতে বাংলাদেশি নৃত্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান 'সৃষ্টি একাডেমি অফ পারফর্মিং আর্টস'র উদ্যোগে ৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হল ‘সংস্কৃতি-উৎসব ২০২৩’। মনোরম পরিবেশে 'এডওয়ার্ডনাশ থিয়েটারে' সৃষ্টি একাডেমির ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষিকা ও নিউজার্সি, নিউইয়র্ক, মেরিল্যান্ড এবং পেনসিলভেনিয়া থেকে আগত কমিউনিটির সদস্যদের একের পর এক নৃত্য, সঙ্গীত, যন্ত্রসংগীত এবং রম্য নাটকের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা দর্শকদের হৃদয় জয় করে নেয়।
অনুষ্ঠানের সার্বিক পরিচালনা ও তত্ত্বাবধানে ছিলেন সৃষ্টি একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা এবং নৃত্যশিল্পী ড. সুবর্ণা খান। সহযোগিতায় শামসুল সাদি ও আফজাল খান এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন একাডেমির প্রাক্তন ছাত্রী রাহিন ও নামিরা, ডিজিটাল ব্যাকড্রপ নির্মাণ ও পরিচালনায় ছিলেন এরহান।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্যাটারসন সিটির কাউন্সিলম্যান অ্যাট-লার্জ ফরিদউদ্দিন নতুন প্রজন্মকে তাদের মা-বাবার ঐতিহ্য-সমৃদ্ধ বাঙালি সংস্কৃতির সাথে সংযুক্ত করার জন্য সৃষ্টি একাডেমী'র নিরলস এ প্রয়াসকে সাধুবাদ জানান। এ ধরনের আয়োজন আরো ঘনঘন করার তাগিদ দিয়েছেন কাউন্সিলম্যান ফরিদউদ্দিন।
সৃষ্টি একাডেমির শিক্ষিকা সুবর্ণা, বিচিত্রা, তমা, ও অহনার নৃত্য পরিচালনায় শাস্ত্রীয় এবং আধুনিক নৃত্যশৈলীর সমন্বয়ে পরিবেশিত হয় বিভিন্ন নৃত্য । স্কটিশ সুরের প্রভাবে রচিত রবীন্দ্রসংগীতের উপর বিশেষ নৃত্যালেখ্য "আলোয় ভুবন ভরা" দর্শকদের ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করে। সৃষ্টি একাডেমির স্নাতক ছাত্রী আমিরার পরিচালনায় নৃত্য পরিবেশনা বিশেষ প্রশংসা পায় ও ফারহানা আখতার তুলি'র পরিচালনায় শিশু-কিশোরদের সম্মিলিত সংগীত পরিবেশনা দর্শকদের অভিভূত করে। নিউজার্সির বাংলাব্যান্ড ‘জার্সি ওয়েভস’র সদস্য সাদি, আফজাল, এবং তাহসিনের জনপ্রিয় সংগীত পরিবেশনা দর্শকদের মাতিয়ে রাখে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ ছিল ড. জাভেদ মাহমুদ শিপলু'র রচনা ও পরিচালনায় রম্য নাটিকা "কেরামত মিয়ার কেরামতি"-যা দর্শকদের বিপুল আনন্দ প্রদান করে। সাংস্কৃতিক পরিবেশনার পাশাপাশি সৃষ্টি একাডেমির এবারের নতুন উদ্যোগ ছিল শিশু-কিশোরদের চিত্রকলা প্রদর্শনী এবং জাহিদ ও সোহেলের পরিচালনায় এই প্রদর্শনী সকলের ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করে। দর্শকরা এ রকম সু-সংগঠিত, সুন্দর, ও সাবলীল অনুষ্ঠান আরো দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
ড. সুবর্ণা খান তার বক্তব্যে বলেন, করোনা মহামারিতে আমরা অনেক প্রিয়জনকে হারিয়েছি। সেই কষ্ট আর অসহনীয় যন্ত্রণাবোধ থেকে কমিউনিটিকে আবারো স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার অভিপ্রায়ে সকলকে নিয়ে একটি আনন্দযজ্ঞ করাই ছিল সৃষ্টি একাডেমির লক্ষ্য। সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি একজন সম্পূর্ণ মানুষ গড়ার প্রচেষ্টাকে গুরুত্ব দেয় সৃষ্টি একাডেমি এবং সে জন্যেই "আধুনিকা" এবং "আগামী"র মতো সামাজিক কল্যাণমূলক সংগঠনকে তিনি অনুষ্ঠানের সাথে যুক্ত করেছেন এবং একইসাথে "বাংলা বলো অনলাইন স্কুল"কে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন ড. সুবর্ণা। ড. সুবর্ণার এই সংকল্পে অন্য সকলে সংহতি প্রকাশের মধ্যদিয়ে চমৎকার এই আয়োজনের পরিসমাপ্তি ঘটে।
বিডি প্রতিদিন/এএম