তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি)। শনিবার সন্ধ্যায় ছাত্রলীগ, এলাকাবাসী ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ৪০ জন আহত হয়েছেন। এসময় ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে প্রায় চার ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন পার্কের মোড় এলাকার লিফা ফাস্ট ফুড অ্যান্ড কনফেকশনারিতে খেতে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী। খাবারের দাম বেশি নেয়া হলে তারা প্রতিবাদ জানান। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে দোকান কর্মচারীদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যলয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান শিশিরের নেতৃত্বে একদল ছাত্র সেখানে হামলা চালায়। এরপর দু'পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
এলাকাবাসী ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পার্ক মোড়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা সন্ধ্যা ৬টায় সমাবেশ করে। ওই সমাবেশ থেকে হঠাৎ করে একদল যুবক বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকার চেষ্টা করে। তারা সশস্ত্র অবস্থায় হামলা চালায়।
এ খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাসহ সাধারণ ছাত্ররা সশস্ত্র অবস্থান নিয়ে পাল্টা হামলা চালায়।
সংঘর্ষের সময় বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় বলে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সকল ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক ও কর্মচারীরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। এ ঘটনার খবর সংগ্রহ ও ছবি তুলতে গিয়ে অন্তত পাঁচজন সাংবাদিক আহত হয়েছেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে সকালের ঘটনায় দুপুরে বেরোবি ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান শিশিরের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে কোতয়ালী থানায় মামলা করেছেন স্থানীয় দোকান মালিক সমিতির আহ্বায়ক মাজেদুল ইসলাম লাবলু। তিনি জানান, তার কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা চাওয়া হয়। এতে রাজি না হওয়ায় শিশির ক্ষিপ্ত হয়ে তার অনুসারীদের নিয়ে দোকানে গিয়ে ভাঙচুর চালায়।
চাঁদার বিষয় অস্বীকার করে বেরোবি ছাত্রলীগের সভাপতি শিশির বলেন, 'ষড়যন্ত্র করে আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। ঘটনার সময় আমি বাড়িতে ছিলাম। ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে একজন সাধারণ ছাত্রের কথাকাটি হয়েছে। এর জের ধরেই ওই ভাঙচুরের ঘটনা।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ জানান, রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সকল কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। রাতেই একটি তদন্ত টিম রংপুরের উদ্দেশে রওনা দেবে। তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেবে। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ