যথাযথ ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসাহমূখর পরিবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মহান বিজয় দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে আজ বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ হলে ম্যুরাল এবং ফজলুল হক মুসলিম হলে বিজয় বাতায়ন উদ্বোধন করা হয়েছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবনে আলোকসজ্জা ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের জন্য প্রার্থনার ব্যবস্থা করা হয়।
সকালে সাভারের স্মৃতিসৌধে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে পুষ্পস্তবক অর্পনের মধ্য দিয়ে দিবসটির কর্মসূচি শুরু হয়। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করা হয়। বিকেলে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ হলে ম্যুরাল এবং ফজলুল হক মুসলিম হলে বিজয় বাতায়ন উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
ম্যুরালটির নাম ‘ভাষা আন্দোলন থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধ’। এটির পরিকল্পনা ও তত্ত্বাবধান ছিলেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন আখতার এবং ম্যুরালটি তৈরি করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সাবেক শিক্ষার্থী শিল্পী মো. গোলাম রসূল সোহাগ। অন্যদিকে, ফজলুল হক মুসলিম হলের বিজয় বাতায়নের পরিকল্পনা ও তত্ত্বাবধানে ছিলেন ফজলুল হক মুসলিম হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শাহ্ মো. মাসুম।
শহীদুল্লাহ্ হলের ম্যুরালটিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণ এবং পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের ঘটনা ও ভাষা আন্দোলনের পটভূমি রাখা হয়েছে। উদ্বোধনকালে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ১৯৪৮ সালে যখন ছাত্রনেতা শেখ মুজিব এবং তার সহকর্মীরা নানাভাবে ভাষা আন্দোলনের পটভূমি তৈরিতে ব্যস্ত ছিলেন এবং অবদান রেখেছিলেন, তারই ধারাবাহিকতায় তৈরি হলো অসাম্প্রদায়িক বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনা।
তিনি আরও বলেন, এ চেতনাকে উপজীব্য করেই বাঙালি জাতিসত্ত্বার মানুষগুলোর মধ্যেই ঐক্যতা তৈরি হয় এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীনতা লাভ করি। যদিও ছোট ম্যুরালে মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক পটভূমি প্রতিফলিত হয়েছে, কিন্তু এটি অল্প সময়ে অনেক কথা বলবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যখন একটি দেখবেন, তখন মহান মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে অনুপ্রেরণা পাবেন।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষ্যাধক্ষ অধ্যাপক ড. মমতাজ উদ্দীন আহমেদ, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড.নিজামুল হক ভূইয়া, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ হল এবং ফজলুল হক মুসলিম হলের আবাসিক শিক্ষকবৃন্দ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ আলী আকবর প্রমুখ।
এছাড়াও বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদসহ বিভিন্ন হল মসজিদ ও উপাসনালয়ে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত ও শান্তি কামনা এবং দেশের সমৃদ্ধি ও উন্নতির জন্য দোয়া-প্রার্থনা করা হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে কলা ভবন, কার্জন হল, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র ও স্মৃতি চিরন্তন-এ আলোকসজ্জা করা হয়।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ