ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্যসেন হলে দুই শিক্ষার্থীকে ঘুম থেকে ডেকে নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থী হলেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী মোঃ আরিফুল ইসলাম এবং থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের একই সেশনের শিক্ষার্থী তরিকুল ইসলাম। আরিফুল ইসলাম হল সংসদের সদ্য সাবেক সদস্য।
তাদের অভিযোগ, হল ছাত্রলীগের সাথে যুক্ত দুই জন 'সিনিয়র' তাদের কিল-ঘুষি ও গলা চেপে ধরে নির্যাতন করেন। তারা হলের ছাত্রলীগ নেতা ইমরান সাগরের সমর্থক তারা। সাগর আল নাহিয়ান খান জয়ের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
অভিযুক্ত দুইজন হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের চতুর্থ সিফাত উল্লাহ সিফাত এবং আধুনিক ভাষা শিক্ষা ইনস্টিটিউটের অধীনে ইংলিশ ফর স্পিকারস অব আদার ল্যাঙুয়েজেস বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদুর রহমান অর্পণ। ঘটনার সময় তাদের সাথে ছিলেন একই সেশনের তাহসিন, মারুফ এবং রেদওয়ান।
উল্লেখ্য, এর ২০১৮ সালে শিক্ষার্থী নির্যাতনের অভিযোগে সিফাত ও অর্পণ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার হয়েছিলেন।
ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থী জানান, আমরা দুজন রাতে ঘুমাচ্ছিলাম, তখন রাত ২ টা ৪০ মিনিটের দিকে আমাদের ইমিডিয়েট সিনিয়র সিফাত ও মাহমুদুর রহমান আমাদের তাদের রুম ৩৫১-তে ডেকে নিয়ে যায়। তখন আমরা বললাম এতো রাতে আমাদের কেনো ডাকছেন? তখন তারা বলে আগে রুমে আয়। এরপর আমরা রুমে গেলে আমাদের কে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে এবং সিফাত ও অর্পণ আমাদের গলা চেপে ধরে।
এসময় 'সোমবার দুপুর ১২ টার মধ্যে হল থেকে বের না হলে তোদেরকে মেরে টাঙ্কিতে ফালাই রাখমু' বলে ওই হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ করেন তারা।
আরিফুল ইসলাম জানান, আমরা রাজনৈতিকভাবে আমাদের ইমেডিয়েট সিনিয়রদের থেকে এগিয়ে যাচ্ছি, এতে তাদের মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। তাই তারা ব্যক্তিগত ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে আমাদের উপর নির্যাতন শুরু করেছে। আমাদের পরীক্ষা থাকার কারণে আমরা প্রোগ্রাম ও গেস্টরুমে অনিয়মিত হয়ে যাই। এই নিয়ে তারা আমাদের উপর ব্যক্তিগত ক্ষোভের কারণে মারধর করেছে।
অভিযুক্ত মাহমুদুর রহমান অর্পণের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও সাড়া দেননি। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত সিফাত উল্লাহ সিফাত বলেন, সামনে হল সম্মেলন। আর আমি ভালো অবস্থানে আছি। তাই আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
বিষয়টি জানতে মাস্টারদা সূর্যসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মকবুল হোসেন ভুঁইয়ার মোবাইলে অসংখ্যবার কল করেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, তারা আমার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। আমি সেটা হল প্রভোস্টের কাছে পাঠিয়েছি। অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন