রাজধানীর শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) কৃষি অনুষদের ৭৫ ব্যাচের র্যাগ-ডে উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অনুষ্ঠিত কনসার্টে চেয়ারে বসা নিয়ে শেকৃবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জিনাত আরা জেরিনকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যাদের বিরুদ্ধে তিনি এ অভিযোগ করেছেন- তারা বিষয়টিকে বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বলছেন।
আজ শুক্রবার ৪টায় জেরিনকে লাঞ্ছনার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও মানববন্ধনস্থলে অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে তা হয়নি। একইসময়ে ছাত্রীদের আবাসিক হলগুলো এক ঘণ্টা বন্ধ করে রাখা হয়। লাঞ্ছিত করার অভিযোগ সম্পর্কে জেরিন বলেন, ‘গতকাল র্যাগ-ডে কনসার্ট চলাকালে কনসার্টস্থলে আয়েশা আক্তার আঁখি ম্যাম আসলে তাঁর বসার জন্য আমি কৃষকরত্ন শেখ হাসিনা হলের সভাপতি সাবেরী আনোয়ারকে তার চেয়ারটা দিতে বলি। চেয়ার চাওয়াতে সে আমার ওপর রাগান্বিত হয়। এতে আমি তার কাছে দুঃখ প্রকাশ করে চলে আসি।’
‘কিছুক্ষণ পর সাবেরী, বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব হলের সভাপতি আসিফা আক্তার জামিয়া, শেরে বাংলা হলের সভাপতি উজ্জ্বল হেসেন, শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক উপ-সম্পাদক আকাইদ আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক রেদোয়ানুর রহমান ও আসাদুজ্জামান রিদওয়ান এসে আমাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এবং সাবেরি ও উজ্জ্বল আমার গায়ে হাত তুলেন। তারা আমাকে হল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন’ বলেও জানান জেরিন।
জানা গেছে, এ ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. হারুন-উর-রশিদ কৃষকরত্ন শেখ হাসিনা হলে এসে সাবেরী এবং জেরিন’র মধ্যে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করলেও জেরিন প্রশাসনের কাছে এর বিচার চায় বলে প্রক্টরকে সাফ জানিয়ে দেন। এসময় প্রক্টর তাকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন। পরে রাতে ভুক্তভোগী জেরিন অসুস্থ হলে তাকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সকলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘তার সাথে এ ধরনের কোন আচরণ করা হয়নি, জাস্ট হলের সভাপতিকে কেন চেয়ার থেকে উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে তার কারণ জানতে চাওয়া হয় বরং সে উল্টো আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করেন।’ এ বিষয়ে মূল অভিযুক্ত শাখা ছাত্রলীগের কৃষকরত্ন শেখ হাসিনা হল সভাপতি সাবেরী আনোয়ার বলেন, ‘এটা মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন এবং পূর্বপরিকল্পিত একটি ঘটনা।’
তবে এ বিষয়ে কেন্দ্র ও শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। এদিকে, বিকেলে এক ঘণ্টা ছাত্রীদের আবাসিক হলের মূল গেট বন্ধ থাকা প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রভোস্টগণ জানান, ‘গেট বন্ধ রাখার বিষয়টি তাদের জানা নেই।’ এ নিয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. হারুন-উর-রশিদ জানান, ‘লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিডি-প্রতিদিন/শফিক