জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) রাতের আঁধারে গাছ কেটে উধাও করার ঘটনায় দায় নিতে রাজি নয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম।
এজন্য বৃহস্পতিবার (০২ নভেম্বর) উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. মনজুরুল হককে সভাপতি ও আইন বিষয়ক ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. মাহতাব-উজ-জাহিদকে সদস্য সচিব করে ৪ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- জীব বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. নুহু আলম ও ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক এ টি এম আতিকুর রহমান।
এর আগে, গত বুধবার ভোরে জাবির ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র ও মীর মশাররফ হোসেন হলের মধ্যবর্তী ‘সুন্দরবন' এলাকায় ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ভবন নির্মাণের জন্য বিভিন্ন প্রজাতির ৪০টি গাছ কাটার ঘটনা ঘটে। ওই রাতে, গাছগুলোর ডালপালা ফেলে রেখে প্রধান অংশ ট্রাক যোগে মীর মশাররফ হোসেন হল গেইট দিয়ে অন্যত্রে নেওয়া হয়েছে। তবে গাছগুলো কোথায় নিয়ে গেছে এবং কারা কেটেছে তা জানেননা বলে জানিয়েছে আইবিএ বিভাগ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তারা কেউই গাছ কাটার দায় নিতে রাজি নই বলে জানান।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গাছ কাটার সময় আইবিএ'র দুইজন শিক্ষক, প্রক্টোটিয়াল বডির একজন সদস্য এবং নিরাপত্তা শাখার একাধিক কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও অস্বীকার করছে প্রশাসন। এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থলে পথনাটক প্রদর্শন ও ২০টি চারা গাছ রোপণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এছাড়া গাছ কাটার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, আইবিএ ভবনের জন্য বরাদ্দকৃত জায়গা বাতিল ও উন্নয়নের মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের দাবিতে দুপুর ১ টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত নতুন প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে অবরোধ করে রাখেন প্রগতিশীল শিক্ষার্থীরা।
এসময়, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা ও প্রশাসন), কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রারসহ অন্য প্রশাসনিক কর্মকর্তাবৃন্দ অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। ফলে তখন সব ধরনের প্রশাসনিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটে। পরে রাত ৮ টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এসময় উপাচার্য আগামী ৫ কর্মদিবসের মধ্যে ঘটনার তদন্তের জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন এবং পরবর্তী সিন্ডিকেটে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।
এছাড়া গাছ কাটার দায় আইবিএ প্রশাসন এড়াতে পারে না বলে স্বীকারুক্তি দেন ইন্সটিটিউটটির পরিচালক অধ্যাপক কে এম জাহিদুল ইসলাম।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ