বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় আগামীকাল বৃহস্পতিবার। ঢাকার বকশিবাজারে স্থাপিত বিশেষ আদালতে এ রায় প্রদান করা হবে। এ রায়কে ঘিরে গত কয়েকদিন ধরে উত্তপ্ত সারাদেশের রাজনীতি। রায়ের পর দেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় কিনা, এমন শঙ্কায় সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরাজ করছে আতঙ্ক। এ রকম পরিস্থিতিতে সিলেটে ব্যাপক তৎপরতা শুরু করেছে পুলিশ। সতর্ক অবস্থায় রয়েছে মহানগর পুলিশ (এসএমপি) ও জেলা পুলিশ। যে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে সাথে সাথে অ্যাকশনে নামার প্রস্তুতিও রয়েছে পুলিশের।
রায় প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে রাখতেই ষড়যন্ত্রের ফসল এই মামলা। এই মামলার রায়কে ঘিরে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে শান্তিপূর্ণ, অহিংস আন্দোলনে নামার সকল প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে।’
এ রকম অবস্থায় সিলেটে ব্যাপক তৎপরতা শুরু করেছে পুলিশ। সিলেটজুড়ে বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি। সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপি এবং উপজেলা পর্যায়ের নেতৃস্থানীয় বিএনপি নেতাদের গতিবিধি করা হচ্ছে পর্যবেক্ষণ। একইসাথে চলছে গ্রেফতার অভিযানও। গত রবিবার ও সোমবারে সিলেট জেলা পুলিশ ৩৫ বিএনপি নেতাকর্মীকে আটক করার পর তাদেরকে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। কাল মঙ্গলবার পুরো জেলায় কত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তা জানাতে পারেননি পুলিশের দায়িত্বশীলরা। তবে তারা বলছেন, এই গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আগামীকাল সিলেটে যাতে কোনো ধরনের নাশকতা না হয় সেজন্য জেলা ও মহানগর পুলিশ তাদের সকল ফোর্সকে রাখছে বিশেষ সতর্কাবস্থায়। একইসাথে কোনো ধরনের এক্সপ্লোসিভ কেউ যাতে বহন করতে না পারে, সে ব্যাপারেও রাখা হচ্ছে তীক্ষ্ম নজরদারি।
সামগ্রিক বিষয়ে সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামসুল আলম সরকার এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দলের নেত্রীর বিরুদ্ধে রায়কে ঘিরে আতঙ্ক আছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। তবে যে কোনো পরিস্থিতি সামাল দিতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি। মানুষের জানমাল রক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা প্রস্তুত।’
তিনি বলেন, ‘ওই রায়কে ঘিরে সিলেট জেলা পুলিশ গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়েছে। চলছে অভিযান। অভিযানে রবি ও সোমবারে ৩৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার কত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তা বুধবার(আজ) জানা যাবে।’
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহাব বলেন, ‘রায়কে ঘিরে যাতে কোনো ধরনের নাশকতা না হয়, সেজন্য আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি। আগামীকাল বৃহস্পতিবার নগরীতে পর্যাপ্ত ফোর্স মোতায়েন থাকবে। কেউ যাতে 'এক্সপ্লোসিভ' পরিবহন করতে না পারে, সে লক্ষ্যে বাড়ানো হয়েছে চেকপোস্ট।'
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা তাদেরকেই গ্রেফতার করছি, যাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে।’
বিডি-প্রতিদিন/০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮/মাহবুব